চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়
তীব্র তাপদাহ : বৃষ্টি না হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন
স্টাফ রিপোর্টার: তীব্র তাপদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গাসহ গোটা দেশ। তীব্র গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। অনাবৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে ফসল। টানা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এমন পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি ও একটু স্বস্তির বৃষ্টির জন্য গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে ইসতিসকার নামাজ আদায় ও বিশেষ মোনাজাত করেছেন মুসল্লিরা। আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই সময়ে ওই নামাজ আদায় করা হবে বলে জানান চুয়াডাঙ্গা জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনায়েদ আল হাবিবি।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার টাউন ফুটবল মাঠে ওই ইসতিসকার বিশেষ নামাজের আয়োজন করে জেলা ওলামা পরিষদ। এতে অংশ নেন প্রায় ২০০ মুসল্লি। নামাজে ইমামতি করেন জেলা ওলামা পরিষদের সহসভাপতি মুফতি আব্দুর রাজ্জাক। নামাজ শেষে স্বস্তির বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়।
নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লিরা বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহ বিরাজমান। বৃষ্টি না হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাই স্বস্তির বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে দুই রাকাত নামাজ পড়ে দোয়া করা হয়েছে। আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই সময়ে ওই নামাজ আদায় করা হবে বলে জানান জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনায়েদ আল হাবিবি। তিনি জানান, গরমের তীব্রতা চরমে পৌঁছেছে। জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে রাসূলুল্লাহ (সা.) লোকদের নিয়ে ইসতিসকার (বৃষ্টি প্রার্থনা) সালাত আদায় করতেন। বর্তমান অনাবৃষ্টির সময়ে প্রিয়নবী (সা.)-এর অপ্রচলিত সুন্নাহটি পুনরুজ্জীবিত করা সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন, আল্লাহই একমাত্র বৃষ্টি দেয়ার মালিক। তার কাছেই আমরা বৃষ্টি চেয়ে নতজানু হয়েছি। বিশেষ মোনাজাতে প্রার্থনা করেছি।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় বৃষ্টি চেয়ে ইস্তিসকার নামাজ ও বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা শহরের দারুস সালাম ঈদগাহ মাঠে এই নামাজ আদায় করেন আলমডাঙ্গার কয়েকশ’ আলেম উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন আলমডাঙ্গা মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা মাসুদ কামাল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, আলমডাঙ্গা অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, সরকারি কলেজের প্রভাষক গোলাম মোস্তফা, জিয়াউর রহমান, পৌর কাউন্সিলর খন্দকার মুজিবুল ইসলাম, বৃহত্তর কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম রহমান সিঞ্জুল, মুফতি মেহেদী হাসান, হাফেজ আকরামুল হোসেন, আনিসুজ্জামান, প্রমুখ।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহের জেলার ৬ উপজেলায় তাপদাহে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের জনজীবনে। কোনোভাবেই কমছেই না তাপমাত্রার পারদ। উল্টো দিন দিন বাড়ছে গরম আর তাপদাহ। এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায় প্রহর গুনছে মানুষ। এ অবস্থায় বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করেছেন ঝিনাইদহের মুসল্লিরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শহরের ওয়াজির আলী স্কুলমাঠে জেলা ইমাম পরিষদের আয়োজনে সালাতুল ইস্তেসকার নামাজ আদায় করা হয়। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক’শ মুসল্লি অংশ নেয়। এ নামাজের ইমামতি করেন শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব শায়েখ মোহাম্মদ সাইদুর রহমান। নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় প্রচ- তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির আশায় ইসতেসকার নামাজ আদায়।