আলমসাধু-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ : বাসের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথচারীর গায়ের ওপর আলমসাধু
দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদার জয়রামপুর সড়কে আলমসাধু-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন আলমসাধু চালক লাল্টু মিয়া (২২) ও গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় মোটরসাইকেল আরোহী কলেজছাত্র রিফাতের (২০)। অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে আলমসাধুর ধাক্কায় তাসমিনা খাতুন (৪০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা রাত আনুমানিক ৬টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঁঠালতলার সন্নিকটে দামুড়হুদা অভিমুখে ছেড়ে আশা একটি আলমসাধু ও দর্শনাগামী টিভিএস অ্যাপাসি (কালো রঙের) আরটিআর মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে রক্তাক্ত জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই আলমসাধু চালক কুড়–লগাছি ইউনিয়নের আমডাঙ্গা গ্রামের ইমান আলীর ছেলে লাল্টু মিয়া নিহত হন। এ সময় গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের কায়েছ উদ্দীনের ছেলে দর্শনা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র রিফাত (২০) ও মোটরসাইকেল চালক দর্শনা থানাধীন রামনগর গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ্ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র মানিক (২০)। পরে খবর পেয়ে দামুড়হুদা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুত্বর আহত রক্তাক্ত জখমকৃত মোটরসাইকেল আরোহী রিফাত ও মোটরসাইকেল চালক মানিককে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার তরিকুল ইসলাম রিফাতকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মোটরসাইকেল চালক মানিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। ঘটনার পরপরই দামুড়হুদা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লা আল মামুন, পরিদর্শক ম্যোল্লা সেলিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত আলমসাধু চালক লাল্টুর মরদেহ ও দুর্ঘটনাকবলিত আলমসাধু ও মোটরসাইকলেটি উদ্ধার করে থানায় নেয়।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নিকটজনেরা জানান, রিফাত ও মানিক দুই বন্ধু। নিহত রিফাত ও গুরুত্বর আহত মানিক সোমবার বিকেলে দুই বন্ধু মিলে মোটরসাইকেলে করে চুয়াডাঙ্গায় ঘুরতে গিয়ে ছিলো। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে তারা এই দুর্ঘটনার শিকার হয়।
দামুড়হুদা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সবুজ রেজা বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততোক্ষণে আলমসাধু চালক নিহত। ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী দুজনকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে জানতে পারি একজন মৃত্যুবরণ করেছে।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, রিফাতের মাথায় গুরুত্বর আঘাত লাগায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। অপরজন, আহত মানিক ও তার মাথায় গুরুত্বর আঘাত পেয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
দামুড়হুদা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে নিহত আলমসাধু চালক লাল্টুর মরদেহ ও দুর্ঘনাকবলিত আলমসাধু ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহের সুরতহাল রির্পোট করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
অপর দিকে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তাসমিনা খাতুন (৪০) নামে এক নারী পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে তাসমিনাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তাসমিনা খাতুন পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে আব্দুস সালামের স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা থেকে দর্শনাগামী শাপলা পরিবহনের একটি বাস হাটকালুগঞ্জ এলাকায় পৌঁছুলে পেছন থেকে একটি অবৈধ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত আলমসাধুর ধাক্কা দেয়। এতে আলমসাধু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ে পাশের পথচারী তাসমিনা খাতুনের গায়ের ওপর। পরে স্থানীয়রা তাসমিনা খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহানা আহমেদ বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাসমিনা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ