চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের ওএমএস’র ২৭ বস্তা চাল উদ্ধার নিয়ে কাটেনি জট : পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্বে নিরাপত্তা প্রহরী

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার তালতলা থকে পুলিশের ২৭ বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধার নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। ডিসি ফুডের আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে ওএমএস কর্মসূচির পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা হিসাবে খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী আজিজুর রহমান নিজেকে ট্যাগ অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। একজন নিরাপত্তা প্রহরী কিভাবে পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পেলেন; তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন? চাল গায়ের পেছনে শুধু ডিলার নয়; কে বা কারা জড়িত তা সুষ্ঠু তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে যাবে বলে সচেতনমহল মনে করছে।
সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রাম ১৯ আগস্ট পুলিশ অভিযান চালিয়ে খোলা বাজারে বিক্রির জন্য বরাদ্দের ওএমএস’র ২৭ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রামের মৃত সোনা শেখের ছেলে আব্দুস সামাদ ওরফে আবু শামাকে। সে সময় পুলিশের নিকট সামাদ জানায় চালগুলো ছিলো তার চাচাতো ভাই ৬নং ওয়ার্ডের ডিলার যুবলীগ নেতা আজাদ আলীর। পুলিশের চাল উদ্ধারের পর থেকে জনমনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। সরকারি চাল নিয়ে একের পর এক এসব হচ্ছে কি? চাল কারসাজির সাথে কি শুধুই ডিলাররাই জড়িত থাকে না নেপথ্যে অন্যকিছু?
এদিকে চুয়াডাঙ্গা ডিসি ফুড কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের অত্যান্ত আস্থাভাজন এবং পছন্দের ব্যক্তি খাদ্যগুদামের নিরাপত্তা প্রহরী আজিজুর রহমান। সে সুবাদে তিনি ওএমএস কর্মসূচির পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় ওএমএসের ২৭ বস্তা চাল সুুষ্ঠুভাবে বিতরণে ট্যাগ অফিসার বা পর্যেবক্ষণকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনে স্বাক্ষর আছে আজিজুর রহমানের। সূত্র জানিয়েছে আজিজুর রহমান উর্ধ্বতন অফিসারদের আস্থাভাজন হতে এবং এক অফিসারের কথা অন্য অফিসারের কানে তুলে কানভারী করার ক্ষেত্রে জুড়ি নেই তার। বেগমপুরে নিম্নমানের চাল সরবরাহের ক্ষেত্রে সদর এলএসডি কর্মকর্তা সরকারি গুদামে রিসিপ না করতে চাইলে আজিজুর রহমান ডিসি ফুডের কানভারী করেন এবং সরবরাহকারীর নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে ডিসি ফুড সেই চাল এনওসি দিয়ে সদর খাদ্যগুদামে রাখতে বাধ্য করেন। যা জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সুপারিশে তেমন কথায় উঠে আসে। বেগমপুরে নিম্নমানের চাল সরবরাহ এবং ২৭ বস্তা ওএমএস চাল উদ্ধার একই সূত্রেগাথা বলে সচেতনমহল মনে করছেন। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে। আপাতত দৃষ্টিতে আজিজুর রহমানের চালচলন এবং বেশভুসা দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি নিরাপত্তা প্রহরী নয়, কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু-ু উপজেলার ভালকী গ্রামের মসলেম উদ্দীনের ছেলে আজিজুর রহমান ২০০৮ সালে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে নিজ জেলায় চাকরি জীবন শুরু করেন। বদলির চাকরি হিসেবে ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গাতে বদলি হয়ে আসেন। আর তখন থেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ডিসি ফুড রেজাউল ইসলাম বলেন, উপরোক্ত দুটি বিষয়ে আমার কোন যোগসাজস নেই। নিয়ম মেনেই সবকিছু করা হয়েছে। চাল কোনো ডিলারের নিকট থেকে নেয়া হয়নি। শুধু গুদাম পরিবর্তন করে জীবননগর থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর গুদামে রাখা হয়েছে। তাছাড়া সদর এলএসডি অফিস থেকে যে চাল বিতরণ করা হয়েছিল তার ১.৫% লাল চাল ছিল যা নিয়মের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু ওই চাল বিতরণ করার কথা ছিলো না। সরকারি খাদ্যগুদামে আগের সিরিয়ালের চাল ছিল। সেগুলো বিতরণ করার কথা থাকলেও সেটি না দিয়ে ডিসি ফুডের চাল কেন দেয়া হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
ওএমএস কেন্দ্রের অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী আজিজুর রহমান বলেন, ডিসি ফুড স্যার আমাকে যেভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন আমি সেভাবেই দায়িত্ব পালন করেছি। তাছাড়া চুয়াডাঙ্গায় খ-কালীন ঝাড়–দারের দায়িত্ব পালনকারী। ওতো ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। আমি তো নিরাপত্তা প্রহরী। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More