চুয়াডাঙ্গায় দুদিনে আরও ১১ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত
স্টাফ রিপোর্টার: দুদিনে চুয়াডাঙ্গায় আরও ১১ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮শ ২৩ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও দুজন।
শনিবার চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে পূর্বের প্রেরিত ১১ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। ১১ জনের মধ্যে ৪ জন করোনা ভাইরাস পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ ৪ জনের বাড়ি জীবননগর উপজেলায়। শুক্রবার ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয় ৭ জন। এদের মধ্যে ৪ জন দামুড়হুদা উপজেলার, দুজন সদর উপজেলার, ১জন আলমডাঙ্গা উপজেলার। দামুড়হুদার যেসব এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ওইসব এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করে নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শনিবার উপজেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর উপস্থিত থেকে সংক্রমণ রোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্বপালনের আহ্বান জানান। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের অধিকাংশ মহল্লায় রয়েছে করোনা ভাইরাস রোগী। যেসকল বাড়িতে কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে ওইসব বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে সকলকে সতর্ক করার কথা থাকলেও সর্বক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা বলেছেন, আক্রান্তকে বা তার পরিবারকে খাটো করে দেখার জন্য নয়, বরঞ্চ সংক্রমণ রোধেই সতর্কতামূলক লাল পতাকা লাগানো উচিৎ।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ শুক্রবার কারো নমুনা সংগ্রহ না করলেও শনিবার নতুন ৪৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ১০ হাজার ৪শ ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১০ হাজার ১শ ৫৩ জনের। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৫৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮শ ২৩ জন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১শ ৬৯ জন। সদর উপজেলার ৪৬ জনের মধ্যে হাসপাতালে ১১ জন, রেফার্ড একজন ও বাকি ৩৪ জন হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ১১ জনের মধ্যে ১ জন রেফার্ড, একজন হাসপাতালে ও ৯ জন বাড়িতে রয়েছেন। দামুড়হুদা উপজেলার ৯৩ জনের মধ্যে হাসপাতালে ১৩ জন, রেফার্ড ২ জন, বাড়িতে ৭৮ জন। জীবননগর উপজেলার ১৯ জনের মধ্যে একজন হাসপাতালে বাকি ১৮ জন নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগসূত্রে জানা গেছে। অপরদিকে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ফলে লকডাউন করে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চলছে। এলাকা ক্যাম্প করে উপসর্গে আক্রান্তদের নমুনাও সংগ্রহ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মাঝে উপসর্গ নিয়ে পর পর ৪ দিনে ৪ জন মারা গেছেন। দুজনের কোভিড -১৯ পজিটিভ হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪ জন, চুয়াডাঙ্গার বাইরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ জন।
এদিকে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে সারা দেশে ১৩ হাজার ১শ ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন ১ হাজার ৪শ ৪৭ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শানাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬শ ৬৭ জন। মারা গেছেন ৪৩ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে ১২ হাজার ৮শ ১ জন।