স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় প্রশাসনিক তদারকির কারণে পাইকারি বাজারের পর খুচরা বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। গত শনিবারের তুলনায় গতকাল রোববার সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা কমেছে। তবে গত ১০ দিনে দাম যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে দাম কমেনি। বিক্রেতারা বলছেন, আগামী কয়েক দিনে দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে। শহরের চালপট্টিসহ বিভিন্ন বাজারে গতকাল যৌথ অভিযান চালান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা বিপণন কার্যালয় ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এ সময় চালের দোকানে কেনাবেচার মূল্যতালিকা না থাকায় দুটি দোকানের মালিককে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ও সীমিত লাভে চাল বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়। অভিযানের খবরে খুচরা দোকানদারেরা চালের দাম কমিয়ে দেন। গতকাল রোববার দুপুরে শহরের চালপট্টি ও বড় বাজার নদীরধার চালের বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের প্রতি কেজি মোটা চাল (স্বর্ণ) ৪৬ থেকে ৪৮, চিকন (ব্রি-২৮) ৫০, মিনিকেট (মানভেদে) ৬২ থেকে ৬৬ ও বাসমতী ৭০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। একই বাজারে শনিবার প্রতি কেজি মোটা চাল ৫০, চিকন ৫২, মিনিকেট ৬৮ ও বাসমতী ৭২-৭৪ টাকা বিক্রি হয়। এদিকে চালের দাম নিম্নমুখী হলেও ক্রেতারা এখনো খুশি হতে পারেননি। সরেজমিন নদীরধার বাজারে গিয়ে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। শহরের পুরাতনপাড়ার বাসিন্দা আজাদ রহমানের অভিযোগ, ১০ দিনে দাম যেভাবে বেড়েছিলো, কিছুটা কমলেও সেভাবে কমেনি। বিক্রেতারাও বিষয়টি স্বীকার করছেন। তিনি বলেন, ‘মোকাম, পাইকারি ও খুচরা দোকানে সঠিক তদারকি হলে দাম সহনীয় পর্যায়ে নামবে।’ খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১১ জানুয়ারি বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, চিকন ৫০, মিনিকেট ৬০-৬১ ও বাসমতী ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে চালের দাম সেভাবে কমেনি। গতকাল রোববার জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করেন এবং প্রয়োজনীয় তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার পর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ, জেলা বিপণন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ কে এম শহিদুল হক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে চালের বাজারে অভিযান চালান। এ সময় শহরের স্টেশন এলাকার চালপট্টিতে অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মেসার্স আলেম চাউল ঘরের স্বত্বাধিকারী মজিবর রহমান ও মেসার্স হুছাইন চাউল ঘরের স্বত্বাধিকারী আজিবার রহমানকে ৩ হাজার করে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ বলেন, চালের মোকাম ও আড়তে মজুতবিরোধী তদারকির পর খুচরা দোকানের দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হয়। তাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, অবৈধ মজুত প্রতিরোধ, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও দাম স্থিতিশীল রাখতে খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্যসচিবের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অভিযানের প্রভাব বাজারে পড়তে শুরু করেছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.