সুস্থ হয়েছেন ৮১ : নতুন ৩৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আরও ১শ’ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে সুস্থ হয়েছেন ৮১ জন। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গায় একজন করোনা আক্রান্ত এবং ৪জন উপসর্গ নিয়ে মোট ৫ জনের মৃত্যু হলেও সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যে মৃত্যু সংখ্যা শূন্য বলা হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা পূর্বের মতো ১৫৯ জনেই রয়েছে।
গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আমেনা খাতুন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গত ১০ জুলাই তার সংগৃহীত নমুনায় করোনা শনাক্ত হলে আমেনা খাতুনকে রেড জোনে ভর্তি করা হয়। রোববার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে আমেনা খাতুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও গতকাল রাতে সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্যে মৃতের সংখ্যা ছিলো শূন্য।
এদিকে গতকাল রোববার রাতে পাওয়া প্রাপ্ত তথ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে যারা মারা গেছেন তার মধ্যে রয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের কালু সর্দারের মেয়ে ফুলজান (৬২) সম্প্রতি সর্দি কাশি জ্বরে আক্রান্ত হন। গত ১৫ জুলাই বিকেল ৫ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে তাকে ভর্তি করা হয়। রোববার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। আকলিমা খাতুন নামে নারী সর্দি কাশি জ্বর ও গলায় ব্যথায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্টও ক্রমশ বাড়ছিলো। তাকে গত ১৪ জুলাই বিকেল ৬ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা দেখে হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তি করান পরিবারের সদস্যা। রোববার দুপুর দুইটার দিকে মারা যান ৫০ বছর বয়সী আকলিমা খাতুন।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলতদিয়াড় গ্রামের রাজিয়া খাতুন (৬০) নামে এক বৃদ্ধা জ্বর, ঠা-া ও শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ভুগছিলেন। গত ১৭ জুলাই দুপুর ১টা ২০ মিনিটে সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাজিয়া খাতুন শহরতলী দৌলতদিয়াড় গ্রামের মৃত আশির উদ্দিন বিশ্বাসের মেয়ে।
চুয়াডাঙ্গার জাফরপুর এলাকার খোকনের স্ত্রী নিলুফা সম্প্রতি সর্দি-কাশি ও জ্বরে ভুগতে থাকেন। অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নিলুফাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। তার কিছুক্ষণ পরই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মধ্যেই ৩৫ বছর বয়সী নিলুফা মারা যান।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসানের দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, গতকাল রোববার নতুন ৩৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে ১৯ হাজার ৭শ ৯১ জনের। মোট ফলাফল পাওয়া গেছে ১৯ হাজার ৫শ ২৫ জনের।
এদিকে, রোববার রাতে ৩৯৬ নমুনা পরীক্ষার ফলাফল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট আসে। এর মধ্যে ১০০ জন নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ হাজার ৪শ ৩৫ জনে। নতুন যে ১শ’ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে সদর উপজেলার ৪৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২৬ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১২ জন ও জীবননগর উপজেলার ১৮ জন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্তকৃত সক্রিয় রোগীর মধ্যে হাসপাতালে রয়েছে ১৩০ জন, বাড়িতে রয়েছেন ১ হাজার ৯শ ৮৯ জন। এদিন ৮১ জনসহ জেলায় মোট সুস্থ হলেন ৩ হাজার ১শ ৫৭ জন।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গায় রোববার করোনায় একজনসহ উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে বলা হয়েছে মৃতের সংখ্যা শূন্য।