চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সবুজ জোনে মারা যাওয়া গোলাম মঈনুদ্দিন ছিলেন করোনা আক্রান্ত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পোস্টঅফিস পাড়ার গোলাম মঈনুদ্দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। গত শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সদর হাসপাতালের সবুজ এলাকার দুই নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওইদিন সকাল ৯টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ থাকায় ওইদিন সকালেই তার নমুনা সংগ্রহ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার পাওয়া নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে গোলাম মঈনুদ্দিনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এদিন চুয়াডাঙ্গার আরও দুজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এদিকে, গোলাম মঈনুদ্দিনের মৃত্যুতে জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৪ জনে। তবে বেসরকারিভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ৫৭। গতকাল তিনজনসহ এ পর্যন্ত জেলায় এক হাজার ৮শ’ ২২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো।
গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গার ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। তার মধ্যে তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। নতুন শনাক্ত তিন করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে একজন পোস্টঅফিস পাড়ার ইমার্জেন্সি সড়কস্থ গোলাম মঈনুদ্দিন। নমুনা দেয়ার পর রিপোর্ট আসার আগেই শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বাকি দুজন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাঙবাড়িয়া গ্রামের। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব মতে নতুন তিনজনসহ জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮শ’ ২২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তারমধ্যে গতকাল একজনসহ সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৬শ’ ৫৫ জন। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গার আরও ২৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার পোস্টঅফিস পাড়ার ইমার্জেন্সি সড়কস্থ মৃত জান মোহাম্মদের ছেলে বৃদ্ধ গোলাম মঈনুদ্দিন (৭৪) অসুস্থ হয়ে শনিবার সকালে হাসপাতালে যান। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভর্তি করে রাখা হয় হাসপাতালের সবুজ এলাকার ২ নম্বর কেবিনে। তবে শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ থাকায় ভর্তির পরপরই গোলাম মঈনুদ্দিনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শনিবার বাদ আছর স্টেশন সংলগ্ন জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজা ও দাফনকার্যে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। ৮ হাজার ৮শ’ ১১ জনের ফলাফলে ১ হাজার ৮শ’ ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের এবং সুস্থতা লাভ করেছেন ১ হাজার ৬শ’ ৫৫ জন। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ১১৪ জনের মধ্যে হাসপাতালে তথা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ৫ জন এবং হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০৪ জন। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছে ৫ জনকে।
উপজেলা পর্যায়ে কোভিড-১৯ রিপোর্টে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় নতুন আক্রান্ত দুজনসহ মোট রোগী ৯৬৮ রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮৬৮ জন এবং ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সদরে বর্তমানে আক্রান্ত ৭৭ জনের মধ্যে ৪ জন রেফার্ড এবং ৪ জন হাসপাতালে ও ৬৯ জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। আলমডাঙ্গায় নতুন একজনসহ মোট আক্রান্ত ৩৪৮ রোগীর মধ্যে ৩২৫ সুস্থ এবং ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত ৭ জনের সকলেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। দামুড়হুদায় মোট ৩১৪ জনের মধ্যে ২৮৪ জন সুস্থ এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত ১৯ জনের ১৮ জনই বাড়িতে বাকি একজন রয়েছেন হাসপাতালে। জীবননগর উপজেলায় মোট ১৯২ জন করোনা রোগীর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু এবং ১৭৮ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে আক্রান্ত ১১ জনের একজনকে রেফার করা হয়েছে, বাকি ১০ জনই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।