স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে আরও দুজন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আরও ৮৬ জন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ৭৪ জন ও বাড়িতে ৯৪৫ জন। এ ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে রয়েছেন অর্ধশতাধিক। যাদের অধিকাংশেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া করোনা আক্রান্তদের মধ্য থেকে ৩ জনকে রেফার্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে বুধবার ২৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে ৮৬ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলার ১৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২৬ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ২০ জন, জীবননগর উপজেলার ২৬ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪শ ৫ জন। বুধবার সুস্থ হয়েছেন ১০৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ২ হাজার ২শ ৮১ জন। গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে ৪০ দশমিক ৯২ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ কমিটির সভাপতি তথা জেলা প্রশাসক জোর দিয়ে বলেছেন, জেলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্তের জন্য অবশ্যই আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এদিকে বুধবার করোনা আক্রান্তদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে জীবননগর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ হক বেশ কিছুদিন ধরে সর্দি কাশি জ¦রে ভগছিলেন। তার নমুনা পরীক্ষা করে কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়। তাকে নিজ বাড়িতেই আইসোশেনে রাখা হয়। গতকাল বুধবার ৬৫ বছরের মোহাম্মদ হক নিজ বাড়িতেই মারা যান। দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির সর্দি কাশি জ¦র ও গায়ে ব্যথায় আক্রান্ত হন। তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত হন তিনি কোভিড-১৯ রোগী। তিনিও নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন। ৪০ বছর বয়সী হুমায়ুন কবীর গতকাল শ^াসকষ্ট নিয়ে মারা যান। এ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে দাঁড়িয়েছে ৯১ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গার বাইরে মারা গেছেন আরও ১০ জনের বেশি। তাছাড়া উপসর্গ নিয়ে গত কয়েকদিনে মারা গেছেন আরও ১৭ জন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেহ আকরাম জানিয়েছেন, দামুড়হুদা উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের পরিবতের ছেলে হাশেম আলী কয়েকদিন ধরে সর্দি কাশি জ¦রে ভুগছিলেন। গায়েও ব্যথা ছিলো। শ^াস কষ্ট বেড়ে গেলে গতকাল বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পৌনে ১টার দিকে হলুদ জোনে ভর্তির ঘণ্টা চারেকের মাথায় বিকেল ৪টায় তিনি মারা যান। তারও নমুনা নেয়া হয়েছে। ৭০ বছর বয়সী হাশেম আলীর মৃতদেহ নিজ গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের পরামর্শ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। আলমডাঙ্গা উপজেলার কুলপালা গ্রামের জুলমত আলী শেখের ছেলে এনামুল হক বেশ কিছুদিন ধরে সর্দি কাশি জ¦রে ভুগছিলেন। শ^াস কষ্ট বাড়লে তাকেও গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বেলা ১টার দিকে ৮০ বছর বয়সী জুলমত শেখ মারা যান। তারও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের নিদের্শনা দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একই উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের স্ত্রী তানিয়া আকতার বেশ কিছুদিন ধরে সর্দি কাশি জ¦রে ভুগছিলেন। শ^াসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। গতরাত সোয়া ১০টার দিকে হলুদ জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৩৬ বছরের তানিয়া আক্তার। তারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।