চুয়াডাঙ্গায় আয়োজিত জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান

৫৭জন সেনা কর্মকর্তা হত্যার দায়ে শেখ হাসিনার ৫৭বার ফাঁসি হবে

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য কিনা করেছে। দীর্ঘ ছয়মাস বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি রেখে অসুস্থ বানিয়েছে। শেখ হাসিনা ৫৭জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেছে। তাদের হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা এবং তার দোসরদের ৫৭ বার ফাঁসি হবে। কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার টাউন ফুটবল মাঠে আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, খুনি হাসিনার জায়গা বাংলাদেশে নেই। তাদের প্রেতাত্মাদের জায়গা নেই। তারা যদি দেশে আসার চিন্তা করে তাহলে দেশের মানুষ তাদের জায়গা দেবে না। আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, সঠিক রোডম্যাপ ঘোষণা করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বিএনপির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের সামনে কঠিন সময়। সেই কঠিন সময়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে এবং দেশ পুনর্গঠনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক মন্ত্রী ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, বিগত ৩টি নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারেননি। যুগে যুগে আন্দোলন করেই মানুষ দাবি আদায় করেছে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের রক্তের বিনিময়ে। ৬২ শিক্ষা আন্দোলন হয়েছিলো, সেদিন সেই আন্দোলনে ওয়াজুল্লাহ বাবুল রক্ত দিয়ে শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান হয়েছিলো শহীদ আসাদের রক্তের বিনিময়ে। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সশস্ত্র সংগ্রাম হয়েছিলো। সেই সংগ্রামে লক্ষ লক্ষ ভাইয়েরা শহীদ হয়েছে, মা-বোনেরা ইজ্জত হারিয়েছিলো, সেজন্য আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। এরপর ৯০’র আন্দোলন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা সেদিন পেয়েছিলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ। বিগত ১৬ বছর দেশনায়েক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীসহ বহু নেতৃবৃন্দ গুম হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা পেলাম নতুন বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশে আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার মাটি তো অত্যন্ত উর্বর। আজ এখানে এসে দেখলাম চুয়াডাঙ্গা বিএনপির ঘাঁটি। আগামী নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে উপকার হিসেবে আপনারা দেবেন এটা হাজার হাজার মাইল দূরে তারেক রহমানকে করতালির মাধ্যমে দেখায় দেন। এদেশ পুনর্গঠন করতে হবে। তারেক রহমান বলেছেন, দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। তিনি আরও বলেছেন, দীর্ঘ ১৬ বছর যারা আন্দোলন করেছে সে সকল সমমনা দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। তারেক রহমান বলার পর সংস্কার করে আজ অন্তর্বর্তী সরকার সে কথা বলছে। তাই আজকে আমাদের সামনে কঠিন সময়। সেই কঠিন সময়ে আপনাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি, দেশ পুনর্গঠনের প্রস্তুতি। দীর্ঘ ৬টি বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে রাখা হয়েছিলো। বেগম খালেদা জিয়াকে সেøা-পয়েজেন করে অসুস্থ করে ফেলেছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা কী-না করতে পারে। ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। এই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হবে। কেউ ঠেকাইয়ে রাখতে পারবে না। খুনি হাসিনা হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে।
আজ তার বিচার হচ্ছে। এই বিচারে শেখ হাসিনার কতবার ফাঁসি হবে তার কোনো হিসাব নিকাশ নেই। শুধু শেখ হাসিনা নয় তার দোষরদেরও বিচার হবে বাংলার মাটিতে। সেই বিচারের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার ফাঁসি হবে। শেখ হাসিনা বলেছিলো, ‘শেখ হাসিনা পালায় না, আওয়ামী লীগ পালাই না।’ পুরা গুষ্টি শুদ্ধ আজ তারা পালিয়েছে। শেখ হাসিনা ও দোষরদের এই বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনদিন জায়গা হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামীতে নির্বাচন করবেন। আগামী দিনে সরকার হবে খালেদা জিয়া সরকার, আগামী সরকার হবে তারেক রহমানের সরকার, আগামী সরকার হবে বিএনপি সরকার, আগামী সরকার হবে আপনাদের সরকার। তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে’। আজ সেই রাজপথ জনগণের ঘেরাওয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পেতাত্মারা আজ যদি বাংলাদেশে আসার চিন্তা করে মানুষ তাদের জায়গা দেবে না। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের ভোটে আগামী নির্বাচনে বিএনপির সরকার হবে ইনশাল্লাহ। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যান বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। আপনারা ঘরে ঘরে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দেবেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কু-ু। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা ও এড.ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মোকাররম হোসেন, জেলা যুবদলের সভাপতি শরীফ উর সিজার, জেলা মৎসজিবি দলের আহবায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মো সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিতা প্রমুখ।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, মো. সফিকুল ইসলাম পিটু, খালিদ মাহমুদ মিল্টনের যৌথ সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো নজরুল ইসলাম নজু, জীবননগর উপজেলা সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান লিপটন, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো আমিনুল হক রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল হাসান তনু, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলী, মো জিল্লুর রহমান ওল্টু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মনি, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আজিজুর রহমান পিন্টু, জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি মো শাহজাহান কবীর, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আলী, জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান ডাবলু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দার, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো সাইফুর রশীদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শরিফুল আলম বিলাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমএ আবু তালহা, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাহজাহান খান, জেলা আইনজীবী ফোরাম এর সভাপতি অ্যাড. শামিম রেজা ডালিম, সাধারণ সম্পাদক এড, সৈয়দ হেদায়েত হোসেন আসলাম প্রমুখ। জেলা ওলামা দলের আহবায়ক ফজলুর রহমান ফজলু, পবিত্র কোরান তেলওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব মওলানা আনোয়ার হোসেন ও গীতাপাঠ করেন কাজল।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More