চুয়াডাঙ্গার বেগমপুরে নিম্নমানের চাল বিতরণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন : ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদে ঈদের আগে নি¤œমানের ভিজিএফ’র চাল বিতরণের ঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার। সেই সাথে কমিটিকে তিনদিনের প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে তদন্ত কমিটিতে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে সদস্য করায় নিরপেক্ষ তদন্ত যাতে প্রভাবিত না সেদিকে দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন মহল।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদে ঈদের আগে ১ হাজার ৬৮৫ জন দরিদ্র সুবিধাভোগীর বিপরীতে ১৬ হাজার ৫৬০ কেজি ভিজিএফ’র চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়। আর এ চাল সরবরাহ করে চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ। ১৯ জুলাই সকালে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে পরিষদ থেকে সরবরাহকৃত চাল বিতরণের উদ্বোধন করা হয়। দুপুরের দিকে নিম্নমানের চাল নিয়ে ইউনিয়নবাসী প্রতিবাদি হয়ে ওঠেন। একপর্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমানের নির্দেশে ইউনিয়ন পরিষদ চাল বিতরণ বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই সাথে নির্বাহী অফিসার চুয়াডাঙ্গা খাদ্যগুদাম এবং বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদ সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তে নিম্নমানের চাল প্রতীয়মান হওয়ায় তিনি অবিতরণকৃত ৩৫২ বস্তা (১০ হাজার ৫৬০ কেজি) চাল জব্দ করে খাদ্যগুদামে ফেরত পাঠান। ঈদ আসন্ন হওয়ায় রাতের মধ্যেই খাদ্যগুদাম থেকে ভালোমানের সমপরিমাণ চাল পরিষদের অনুকূলে সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেন তিনি। ভিজিএফ’র নিম্নমানের চাল সরবরাহকে কেন্দ্র করে অধিকতর তদন্তের জন্য গতকাল সোববার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ অফিসার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও জেলা মার্কেটিং অফিসার। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এদিকে কমিটির আহ্বায়ক মনিরা পারভীন চিঠি (স্মারক নং-৫১.০১.১৮০০.০০০.১৪.০০৩.২১-৪৪) পেয়ে গতকালই কমিটির সদস্য ছাড়াও বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, চুয়াডাঙ্গা খাদ্য গুদামের ওসি, এলএসডি এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের আজ মঙ্গলবার ি বিকেল সাড়ে ৩টার সময় তার অফিসকক্ষে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। সূত্র জানিয়েছেন, যে বিষয়গুলো তদন্তে আসতে পারে তার মধ্যে রয়েছে সরবরাহকৃত চাল গুদামের ক্রয়কৃত না অন্য কোথা থেকে প্রাপ্ত। প্রাপ্ত হলে কোথা থেকে প্রাপ্ত। ৫ বছর আগের অর্থাৎ ২০১৬ সালের বস্তা থাকার কথা না, তারপরও ব্যবহার হলো কীভাবে ? ৬৬৬ বস্তার একট্রাক চাল গুদামে রাখা নিয়ে মেসেস আদান প্রদান ইত্যাদি। আহ্বায়ক বলেন, কমিটিতে যেই থাক না কেনো, তদন্তে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষেই যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।