চুয়াডাঙ্গার একজন মারা গেলেন রাজশাহী মেডিকেলে : নতুন শনাক্ত ৮
দামুড়হুদা উপজেলার ১৮টি গ্রাম লকডাউন করে সংক্রমণ রোধে প্রশাসন তৎপর
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আরও একজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। নজির মিস্ত্রি নামের আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী ওই ব্যাক্তি শনিবার দিনগত মধ্যরাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় মারা যান। এদিকে রোববার চুয়াডাঙ্গার ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিন আরও ৫ জন সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ রোববার তুন ৯৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছে। পূর্বের প্রেরিত ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় যে ৮ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১ জন ও জীবননগর উপজেলার ১ জন। সদর উপজেলার ৪ জনের মধ্যে দুজন দৌলাতদিয়াড়ের, ১জন জেলা শহরের রেলপাড়ার ও অপরজন দ্বিননাথপুরের বাসিন্দা। আলমডাঙ্গা উপজেলার দুজনের মধ্যে একজনের বাড়ি ওসমানপুর ও অপরজনের বাড়ি মোড়ভাঙ্গায়। জীবননগর উপজেলার একজনের বাড়ি দেহাটি ও দামুড়হুদা উপজেলার একজনের বাড়ি বিষ্ণুপুরে। এ নিয়ে জেরায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭০ জনে। রোববার সুস্থতা পেয়েছেন ৫ জন। এনিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ১ হাজার ৮শ ২৮ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৭০ জন। অবশ্য রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতবরণকারী নজির মিস্ত্রির বাড়ি দামুড়হুদা উপজেলার কুতুবপুরে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৭২ জন। এর মধ্যে বাড়তে ১৪৫ জন, হাসপাতালে ২৪ জন ও রেফার্ড রয়েছেন ৩ জন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেরার ৪৫ জন সক্রিয় রোগীর মধ্যে বাড়িতে ৩৪ জন, হাসপাতালে ১০ জন ও রেফার্ড রয়েছেন ১ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৩ জনের মধ্যে ১জন হাসপাতালে, একজন রেফার্ড। দামুড়গহুদা উপজেলার ৯৪ জন রোগরি মধ্যে ৮১ জন বাড়িতে ১২ জন হাসপাতালে একজন রেফার্ড রয়েছেন। জীবননগর উপজেরার ১০ জন সক্রিয় রোগীর মধ্যে একজন হাসপাতালে ১৯ জন নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। শনিবার জীবননগরের যে ৪ জন শনাক্ত হন তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি কাশিপুর, একজনের বাড়ি হাসপাতালপাড়াও ও দুজনের ঠিকানা দেয়া রয়েছে জীবননগর।
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার করোনাভাইরাসের সংক্রমন বাড়ায় লকডাউন করা হয়েছে ভারত সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মোট ১৮টি গ্রাম। শনিবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কমিটির জরুরী সভায় ৯টি গ্রাম লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে গত ২ জুন করোনাভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম লকডাউন করে উপজেলা প্রশাসন। রোববার সকাল থেকে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়া ৯ টি গ্রাামে লকডাউন বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে, অবৈধ পথে ভারত থেকে আসছে মানু। করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়া নিয়ে অনেকেই আতঙ্কে। অবৈধভাবে ভারতে থেকে কেউ যাতে দেশে ঢুকতে না পারে সে লক্ষ্যে সীমান্তর্তী এলাকায় টহল জোরদার করেছে বিজিবি। যারা বৈধ পথে দেশে অনুপ্রবেশ করছে তাদের আটক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দামুড়হুদা উপজেলায় বর্তমানে ৯৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছেন। এ পর্যন্ত দামুড়হুদা উপজেলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যেমন চলছে প্রচার প্রচারণা, তেমনই স্বাস্থ্য বিধি নামানার কারণে অনেকের জরিমনাও করা হচ্ছে। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে গতকালও সংক্রমণ ছড়ানো এলাকায় প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত: দেশে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৫ হাজার ৬শ ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬শ ৭৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮শ ৯৭ জন। মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। মো মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮শ ৩৯ জন।