বেগমপুর/গড়াইটুপি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় নিখোঁজের ১৫ দিনের মাথায় প্রবাস ফেরত ইয়াদ আলীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বেলা ৫টার দিকে সদর উপজেলার আড়িয়া গ্রামের মাঠ থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এখনই বলতে পারছে না পুলিশ। নিহত ইয়াদ আলী সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত আবদুস সালামের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, ইয়াদ আলী (৪০) দীর্ঘদিন বাইরাইনে প্রবাস জীবন শেষে বছরখানেক আগে দেশে ফেরেন। গত ১৫ দিন আগে নিখোঁজ হন তিনি। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। একই গ্রামের কৃষক আবদুল লতিফ জানান, বুধবার বেলা ৩টার দিকে স্থানীয় কেরুজ বাণিজ্যিক খামার মাঠে ঘাস কাটতে যান তিনি। হঠাৎ আখক্ষেতে একটি অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। বেলা ৫টার দিকে দর্শনা থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ইয়াদ আলী বছর খানেক আগে বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। তার মাথায় মানসিক সমস্যা ছিলো। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস, দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লুৎফুল কবির, অপারেশন ওসি নিখিল অধিকারী।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের হারদা চাঁদপুর জোড়াতলার ফিরোজা বেগম বলেন, এটা আমার স্বামী ইয়াদ আলীর (৪৫) লাশ। যা গত ২৪ নভেম্বর মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় হারিয়ে গিয়ে ছিলো। একই দাবি ছেলে শিমুল, ভাই খোরশেদ, রওশন ও আয়াদ আলীর। লাশের অবস্থা অর্ধগলিত হয়ে যাওয়ায় জোরালোভাবে তেমন প্রমাণ উপস্থাপনাও করতে পারছে না। দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লুৎফুল কবির বলেন, লাশের পরিবারের লোকজন তাদের বলে দাবি করলেও দাবিটা জোরালো না। তবে লাশের পরিচয় এবং কি কারণে হত্যা না আত্মহত্যা এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপক্ষো করতে হবে। আর করোনার মধ্যে কোভিটে আক্রান্ত হয়ে কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে সে। তিনি আরও বলেন, ইয়াদ আলী নিখোঁজের পর গত ২৬ নভেম্বর বর্ণনা দিয়ে দর্শনা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডির পর নানা জায়গায় বার্তা পাঠানো হয়েছিলো।
এদিকে গ্রামের অনেকেই মন্তব্য করে বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর প্রবাসে ছিলো। দেড় বছর হলো দেশে এসেছে। সাংসারিক অবস্থাও ভালো। নিখোঁজ হওয়ার সময় গায়ের রঙ শ্যামলা, গায়ে ছিলো শাদা কালো হাফহাতা গেঞ্জি, পরণে লুঙ্গি ও গলায় মাফলার। লাশের কাছে তার ব্যবহৃত কোনো কিছুই দেখা যায়নি। আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তার ব্যবহৃত পোশাকগুলো গেল কোথায়? আর মানসিক ভারসাম্যহীন একজন মানুষ আখ ক্ষেতের এতো গভীরে আসলো কিভাবে? সব প্রশ্নের উত্তর পেতে পুলিশকে অধিক তদন্ত হওয়া দরকার।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ