তফসিল ঘোষণার আভাস না থাকলেও গাছে গাছে ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে প্রার্থীদের প্রচারণা তুঙ্গে
নজরুল ইসলাম: গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গেজেট প্রকাশ না হওয়ার কারণে ভোটার তালিকাও পুনঃবিন্যাস হয়নি। ফলে আপাতত তিতুদহ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। নির্বাচন অফিসসূত্র জানিয়েছে, আসন্ন ইউপি নির্বাচনের তফসিলে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সম্ভব নয়। ইউনিয়নের গেজেট প্রকাশের পর ভোটার তালিকা পুনঃবিন্যাস করা হবে। তারপর তফসিল ঘোষণা। সুতরাং আপাতত তিতুদহ ইউপি নির্বাচন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এদিকে, তফসিল ঘোষণার আভাস না থাকলেও অনেক আগে থেকেই সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনা শুরু করেছেন। নিজের গুণাগুণ তুলে ধরে এলাকার উন্নয়নে নানা আশ্বাস দেয়া কথা সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন গাছে গাছে সাটিয়ে রেখেছেন। ফলে ইউনিয়ন এলাকা ঘুরে চোখে পড়ছে বাহারি সব রঙবেরঙের পোস্টার। এলাকাবাসীদের অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, ভোটের আগেই প্রার্থীরা সব গাছে উঠে বসেছে। আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিতের দাবি জানিয়েছে ইউনিয়নবাসী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পুনঃগঠিত তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে এখনও কাটেনি আইনি জটিলতা। পৌর নির্বাচনের পরপরই ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তিতুদহ ইউপি’র নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা আইনী জটিলতায় আটকে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনের কোনো আভাস না থাকলেও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা আগেভাগেই প্রচার প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। তারই অংশ হিসেবে রঙবেরঙের ছবিযুক্ত বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে গাছে গাছে। শুধু গাছে নয় বৈদ্যুতিক খুঁটি, ঘরের দেয়াল এবং রাস্তার পাশে বাঁশ পুতেও লাগানো হয়েছে ব্যানার ফেস্টুন। বিশেষ করে কোনো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মাড়ে কিংবা রাস্তার বাঁকে এমন চিত্র বেশি চোখে পড়ছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থীদের সংখ্যা গণনা করা না গেলেও এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সংখ্যা পরিষ্কার হয়েছে। প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান টিপু, তিতুদহ ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি শুকুর আলী মিয়া, ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি ফজলুর রহমান, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদ রেজা ও আ.লীগ নেতা ফারুক হোসেন। বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, আহবায়ক কমিটির সদস্য আবুল হাশেম টোটন ও কুয়েত প্রবাসী যুবদল নেতা আমিনুল ইসলাম মিন্টু। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে সোচ্চার রয়েছে আ.লীগের নেতৃবৃন্দ। তবে বিএনপি’র প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় প্রতীক নিয়ে তেমন একটি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ভৌগলিক ও জনসংখ্যার দিকটি বিবেচনা করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পুনঃগঠন ও নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়। আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে গত ২০ অক্টোবর নবগঠিত গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৌর নির্বাচনের পর মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে এ তফসিলে তিতুদহ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই জেনে প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন।
পুনঃগঠিত তিতুদহ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১নং চাঁদপুর ও নুরুল্লাপুর, ২নং গিরীশনগর, আড়িয়ার চক, ৬৩ আড়িয়া ও ৬২ আড়িয়া, ৩নং ছোটশলুয়া, ৪নং বলদিয়া মাদরাসাপাড়া ও কাজলাপাড়া, ৫নং বলদিয়া বাইনেগাড়িপাড়া ও পুরাতনপাড়া, ৬নং বড়শলুয়া দক্ষিণপাড়া, ৭নং বড়শলুয়া উত্তরপাড়া, ৮নং হুলিয়ামারীপাড়া এবং তিতুদহ গ্রাম নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়। এ ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এর আগে, ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ইউনিয়ন ভাগাভাগি নিয়ে হাইকোর্টে ৩টি রিট হয়। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেমদ বলেন, আসছে ইউপি নির্বাচনের তফশিলে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সম্ভব নয়। ইউনিয়নের এখনও গেজেট আসেনি। গেজেট আসার পর ভোটার তালিকা পুনঃবিন্যাস করা হবে। তারপর তফসিল। সামনে আবার রোজা। তাই আপাতত তিতুদহ ইউপি নির্বাচন না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ