গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ফিল্মি স্টাইলে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম টুটুল পক্ষের মধ্যে গতকাল শনিবার সকাল নয়টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে চার জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় টুটুল পক্ষের লোকজন ওই পক্ষের লোকজনকে মারধর করে। আহত একজনকে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর জেরে গতকাল সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আধিপত্য দেখাতে পর পর ৫টি বোমার বিষ্ফোরণ ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের চার জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুই জনকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করছেন উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দ। বোমা হামলা করেছে কারা এমন প্রশ্নে টুটুল পক্ষের লোকজনের নাম পাওয়া যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি টুটুল বলেন, বোমা নিক্ষেপ করেছে চেয়ারম্যানের লোকজন। আমি আগামি নির্বাচনে প্রার্থী তাই চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্থ করছে।
গেল ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন গোলাম ফারুক। টুটুলের অভিযোগ অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে তিনি বলেন, বোমা কারা মেরেছে তা তো অনেক মানুষ দেখেছেন। ঘটনার সময় বাজারে অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গেল বছর দু’পক্ষের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়। ওই সময় গোলাম ফারুক পক্ষের লোকজন একটি মামলা দায়ের করেছির। এমপি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে বেশ কয়েক মাস আসে সাহারবাটি গ্রামের এ বিরোধ মিটিয়ে দেয় পুলিশ। এর পর থেকে গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তবে বেশ কিছুদিন ধরে কিছু বিষয় নিয়ে আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে প্রকাশ্য দিবালোকে বোমা বিষ্ফোরণ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে ওই গ্রামের সুধিজনদের।
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিক, সবজি চাষ ও ব্যবসার দিক থেকে সাহারবাটি গ্রাম আলোকিত গ্রাম হিসেবে পরিচিতি। সেই গ্রামে বোমা নিক্ষেপ করে সংঘর্ষের ঘটনা গ্রামের ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছে বলে মনে করছেন সুধিজনেরা। যেহেতু দুই পক্ষ পাল্টপাল্টি অভিযোগ করছে তাই বাজারের সিসি ক্যামেরাগুলোর ভিডিও ফুটেজ দেখলেই প্রকৃত বোমা নিক্ষেপকারীদের সনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। বিষয়টি দ্রুত বের করার জন্য পুলিশের প্রতি আহবান জানান গ্রামের মানুষ।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে বোমা নিক্ষেপ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম যারাই করুক না কেন তাদেরকে সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ