গাংনীর মা ব্রিকস ইটভাটায় গভীর রাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হানা : শ্রকিমদের জিম্মি করে মারধর
চাঁদার দাবিতে বোমা হামলা : নগদ টাকা ও মোবাইলফোন লুট
গাংনী প্রতিনিধি: গাংনীর মা ব্রিকস ইটভাটায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রধারী ডাকাতরা এক ঘণ্টাব্যাপী ওই ইটভাটায় তা-ব চালিয়েছে। তারা ভাটার শ্রমিকদের একটি কক্ষে আটকে রেখে ১০টি মোবাইলফোন ও ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতরা যাওয়ার সময় একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যায় এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়া পর্যন্ত ইটভাটার সমস্ত কাজকাম বন্ধ রাখতে বলে যায়। অন্যথায় বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় তারা। যাওয়ার সময় ইটভাটায় একটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আশপাশ গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গত বুধবার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানার পর গাংনী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন মা ব্রিকস ইটভাটা। ওই ইটভাটায় গত বুধবার দিনগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ৮-১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত হানা দেয়। মুখোশধারী ওই ডাকাতরা প্রথমেই ভাটার পোড়াই মিস্ত্রি ও কর্মচারীদের জিম্মি করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। হেড মিস্ত্রি মাহাবুল হক জানান, আমরা যাতে কারোর কাছে ফোন না করতে পারি এজন্য তারা সবার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। অস্ত্রধারী ডাকাতরা কারো কারো মারধরও করে। তিনি জানান দুটি টাসফোনসহ ১১টি মোবাইল ও নগদ ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নিলেও পরে তারা যোগাযোগ রক্ষার জন্য শুধু আমার মোবাইলটি ফেরত দিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে যায় বিকাশে টাকা নেয়ার জন্য। তারা বলে যায়, ইটভাটার মালিকপক্ষ আমাদেরকে ৫০ হাজার টাকা না দেয়া পর্যন্ত ইট পোড়ানোর কাজ বন্ধ থাকবে। টাকা না দিলে খুন করার হুমকি দিয়ে যায় তারা। যাওয়ার সময় তারা ইটের খামালে শক্তিশালী একটি বোমা ছুড়ে মারে। এতে ইটভাটাসহ আশপাশ এলাকা কেঁপে ওঠে।
মা ব্রিকসের মালিক রোকনুজ্জামান রোকন, ইয়ারুল ইসলাম ও নাজমুল হক জানান, মুখোশধারী ডাকাতরা প্রায় এক ঘণ্টা ভাটার শ্রমিকদের জিম্মি করে রাখে। এছাড়া টাকা ও মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়ার পর বোমা ছুড়ে মারে। কুলবাড়িয়াসহ আশপাশ গ্রাম থেকে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মালিকপক্ষ জানায়, এ ঘটনার পর ইটভাটার পোড়াই মিস্ত্রিরা ভয়ে ইটপোড়ানোর কাজ বন্ধ করে দেন। পরে বৃহস্পতিবার সকালে আমরা মিস্ত্রিদের অনুরোধ করি কাজ শুরুর জন্য। তারা যেই ইটভাটার কাজ শুরু করেন, সাথে সাথে সন্ত্রাসীরা মোবাইল করে হুমকি দেয়। মা ব্রিকসের মালিক পক্ষের ধারণা আশপাশেই সন্ত্রাসীদের নিজস্ব কেউ আছে। সেই সন্ত্রাসীদের কাছে ইটভাটার তথ্য লেনদেন করছে। মালিকপক্ষ জানায়, ঘটনা জানার পর বেলা আড়াইটার দিকে গাংনী থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ইটভাটা পরিদর্শন করেছেন। তারা আমাদেরকে আশ^াস দিয়েছেন নির্বিঘেœ ভাটা চালানোর জন্য। ৬-৭ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আমরা পুলিশের ওপর ভরসা করে পুনরায় ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করেছি। কিন্তু ভাটার শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতি হলে তো ভাটা চালানো সম্ভব হবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাংনী থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক মাথাভাঙ্গাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা ওই চক্রকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যারাই হোক না কেন তাদেরকে ধরা পড়তেই হবে। বোমা বিস্ফোরণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ছোটখাটো পটকা মেরে দুর্বৃত্তরা আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।