মুজিবনগর প্রতিনিধি: গাঁজা সেবনে বাধা দেয়ায় মুজিবনগরে সাইদুর রহমান নামের এক যুবককে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। এ সময় গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন হামলাকারী মনিরুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগরে যতারপুর গ্রামের মাঠে একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকা- ঘটে। নিহত সাইদুল রহমান (৩৫) উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর জনতার পিটুনিতে নিহত মনিরুল ইসলাম (৩৭) স্থানীয়ভাবে মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নিহত সাইদুল ইসলাম ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আর একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের পিতার নাম আবুল হোসেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে পাঠিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে যতারপুর গ্রামের যাদুখালী পাকুড়তলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প করছিলেন মনিরুল। এ সময় সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে মাদক সেবন বিষয়ে প্রশাসনের তৎপরতার কথা জানান সাইদুল। এ সময় মনিরুলকে মাদক সেবন না করতে বলেন সাইদুল। এ নিয়ে দুজনের বাগবিত-া শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজনই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে থাকেন। এ সময় মনিরুল তার হাতে থাকা ঘাস কাটার হেঁসো দিয়ে সাইদুলের গলায় কোপ দেন। আঘাতের কিছু সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে সাইদুল ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ হত্যাকা-ের খবর এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকার উত্তেজিত জনতা মনিরুলকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তাকে আটকে পাটের আঁশ দিয়ে হাত বেঁধে পিটিয়ে মেরে ফেলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী রবদেল ম-ল বলেন, সাইদুল বিশ্বাস মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলুর ঘনিষ্ঠ। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হওয়ার কারণে পুলিশের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি এলাকার মাদকসেবীদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়ে ‘গ্রেফতার বাণিজ্য’ করতেন। আজ (গতকাল শনিবার) মনিরুলকে মাদক সেবন থেকে সরে আসতে বলেন সাইদুল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। সাইদুল চায়ের দোকানের মাচা থেকে উঠে সামনের পাকুড়গাছের তলায় দাঁড়ালে মনিরুল হেঁেসা দিয়ে তার গলায় কোপ দিয়ে পালিয়ে যান।
মুজিবনগর থানার ওসি আব্দুল হাসেম জানান, মনিরুল ইসলাম মনি একজন মাদকসেবী; সে রাস্তার পাশে গাঁজা সেবন করছিলো। গাঁজা সেবনে বাধা দেয়ায় প্রকাশ্য সাইদুল রহমানকে ধারালো হেঁসো দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় স্থানীয়রা মাদকসেবী মনিরুল ইসলাম মনিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। তিনি আরও জানান, দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার এসএম মোরাদ আলী বেলা একটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এসব এলাকা থেকে মাদক নির্মূলে পুলিশ এখন থেকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে, যাতে করে আর কোনো মাদকসেবী তৈরি না হতে পারে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ