কুষ্টিয়া আমবাড়িয়ার সেই সিরাজের ইন্তেকাল
স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তথা চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপানো সিরাজবাহিনীর প্রধান সিরাজ মারা গেছেন। তিনি স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাতে ইংল্যান্ডের মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে স্ট্রোকে মারা গেছেন বলে সংবাদ ছড়িয়েছে। গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংবাদ ভাইরাল হয়। তার মৃত্যু সংবাদের সত্যতা সম্পর্কে সরাসরি কেউ নিশ্চিত করতে চায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরাজের অনেক নিকট আত্মীয় সিরাজ মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি গোপন সংস্থায় কর্মরত একজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে জানাজা শেষে লন্ডনেই তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
সিরাজ কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত মসলেম ম-লের ছেলে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন সিরাজ ১৯৯৯ সালের ২৩ জুলাই কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়ে ১০৮ সহকর্মীসহ আত্মসমর্পণ করেন। তার একমাত্র ছেলে ফিরোজ লন্ডন প্রবাসী। সিরাজের গ্রামের ডাক্তার সাবুকে কয়েক বছর আগে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকা-ের পর সিরাজের ভাই আমিরের ক্রসফায়ারে মৃত্যু হয়। সেসময় জামিন লাভের পর সিরাজ গোপনে ভারত হয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানেই ছেলের সাথে বসবাস করছিলেন।
তার আত্মসমর্পণের পর কিছু অনুসারী লাল্টুর সাথে যোগ দেন। তবে অধিকাংশই ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে জড়িয়ে সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্থ হন।
চরমপন্থী দলে যেভাবে সিরাজের উত্থান: সিরাজ ১৯৫৯ সালে মিরপুর থানার আমবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দরিদ্র ছিলেন। মাটি কাটার শ্রমিক দলের সরদার ছিলেন। সিরাজরা পাঁচভাই ও দুইবোন। আমবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসাতে। এরপর তিনি হালসা হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এলাকাবাসী জানায়, সিরাজের দাপট অন্ধকার জগৎ যতো বৃদ্ধি পেয়েছিল, তার আত্মীয়স্বজন ততোধিক কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠে। তাদের খবরদারিও ততোটাই সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
মসজিদের ইমাম থেকে সিরাজ একদিন বৃহত্তর কুষ্টিয়া জনপদের মূর্তিমান আতঙ্ক হবে, সে কথা বৃহত্তর কুষ্টিয়া কেন, তার নিজ গ্রাম আমবাড়িয়ার মানুষও কোনোদিন ভাবেননি৷ তার সুললিত কণ্ঠে যখন পবিত্র কোরআনের আয়াত শোনা যেতো, মুয়াজ্জিন হিসেবে আজান দিতেন, তখন মনে হতো সিরাজ একদিন পরিণত বয়সে ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে এলাকার মানুষের মনে আশ্রয় করে নেবেন৷ কিন্তু সে যে এক সময় কুখ্যাত চরমপন্থী দলের নেতা হবেন, মানুষকে ঠা-া মাথায় পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবেন তা একবারও মনে হয়নি অন্যদের। অপরাধ জগতের ইতিহাসে সিরাজ এক জীবন্ত কিংবদন্তী ছিলেন। মূলত কৌশল এবং ধীরস্থিরভাবে ক্যাডারদের পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়ায় প্রায় ক্ষেত্রেই প্রতিপক্ষরা তার কোনো ক্ষতি করতে পারেননি। সে কারণে সিরাজ নিজ উপজেলা বা থানা মিরপুরসহ কুষ্টিয়া সদর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী, খোকশা, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মেহেরপুরের গাংনী, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা এবং সদরের বিভিন্ন অংশে তার বাহিনী দিয়ে কর্মকা- চালাতে সক্ষম হন।
যে ঘটনায় অন্ধকার জগতে পা বাড়ান সিরাজ: আমবাড়িয়া গ্রামে মূল বিরোধ সৃষ্টি হয় স্বাধীনতার পক্ষ এবং বিপক্ষ শক্তির অবস্থান থেকে। ওই গ্রামের মাহবুবুল হক (বুলু বিশ্বাস) ছিলো পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহযোগী এবং শান্তি কমিটির সেক্রেটারি। বুলু বিশ্বাস মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধা মজনুর বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। মজনু পরবর্তিতে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে বুলু বিশ্বাস তরুণ সিরাজকে দলে ভেড়ায়। লেলিয়ে দেয় মজনুর বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য বুলু বিশ্বাসকে জাসদ গণবাহিনী হত্যা করে। এ ঘটনায় সিরাজ দমে যায় সাময়িকভাবে। পরে গা বাঁচাতে যোগ দেন জাসদ গণবাহিনীতে। গণবাহিনী অবলুপ্ত হলে সিরাজ নিজেকে রক্ষা এবং গ্রামবাসীর কাছে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য প্রথমে মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করে। কিছুদিন পর ইমামের অবর্তমানে তিনি নিজেই অস্থায়ীভাবে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন। মসজিদের নামে গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কিছু সম্পত্তি লিখে দেন। সিরাজ দাবি জানায়, তাকে মসজিদের স্থায়ী ইমাম নিযুক্ত করা হোক এবং সম্পত্তির একটি অংশও লিখে দেয়া হোক। তার অতীত কার্যকলাপের জন্য গাঁয়ের অধিকাংশ লোক এতে অসম্মতি জানায়। গাঁয়ের মানুষের পক্ষে এ ব্যাপারে নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম। সিরাজ এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অস্থায়ী ইমামের কাজ ছেড়ে দেন। জাসদ গণবাহিনীর সদস্য থাকাকালে সিরাজের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলো অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার পাইকপাড়ার রফিকুলের। তিনি এক সময় গণবাহিনীর সঙ্গে ছিলেন এবং তার জিম্মায় ছিলো একটা কাটা রাইফেল।
১৯৭৭ সালে রফিকুলকে হত্যা করে সিরাজ তার কাটা রাইফেল লুট করে নেন বলে জানা যায়। তারপর গঠণ করেন সন্ত্রাসী বাহিনী।
হত্যাকা- ও অর্থের সীমাহীন নেশা: মূর্তিমান আতঙ্ক সিরাজের বিরুদ্ধে শতাধিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ছিল অন্য এক আতঙ্কের নাম। অপহৃতকে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিরাজ মোটাঅঙ্কের অর্থও হাতিয়ে নিয়েছেন পরে লাশও আর ফেরত দেয়নি। অনেক মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেন। আলমডাঙ্গা শহরে তিনতলা বাড়ির ভেতর থেকে ফয়েজ উদ্দিন ও তার শিশুপুত্র রাজীব হত্যাকা- এখনও ভোলে নি ।
সন্দেহের বশেই সিরাজ খুন করেছেন অসংখ্য মানুষ: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও যেন প্রায় তিন দশক চলছে ‘খুনের বদলে খুন’ কুষ্টিয়া সদর থানার মাঝিলা গ্রামের নিরীহ চারজনকে প্রাণ দিতে হয়েছিল শুধু প্রতিপক্ষের সন্দেহের কারণে। এক পক্ষ সিরাজবাহিনী অন্যপক্ষ বিপ্লবী কমিউনিস্ট (এমএল)। ওই নিহতের তালিকায় আছেন খোদ আইলচারা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক মাস্টার খালেক মাস্টার কৃষক সংগ্রাম সমিতি করতেন, যে সংগঠনটিকে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির প্রকাশ্য গণসংগঠন বলে হয় সিরাজবাহিনী তার এলাকা সম্প্রসারিত করার জন্য মিরপুর থানা সংলগ্ন কুষ্টিয়া সদরের আইলচারা, আলমপুর, পাটিকাবাড়ি এবং ঝাউদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ক্যাডার সংগ্রহ করতে থাকে ওই এলাকাটি আগে ছিল বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) কর্তৃতে: যেহেতু এই দলটি সে সময় পরিচালিত হতো রাজনৈতিক কর্তৃত্বে এবং এর সদস্যরা যখন-তখন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারত না দলের নির্দেশ ছাড়া। তাই সিরাজ খুব দ্রুত তার সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে। মাঝিলা, নান্দিয়া, হাড়–লিয়া, মাগুরা, দুর্গাপুর, পাটিকাবাড়ি, ফকিরাবাদ, খেজুরতলা ও গোপালপুর চরপাড়ায় সিরাজবাহিনী অবস্থান নেয় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থান ছিলো খোদ আইলচারা, নাজিরপুর, সাড়াতলা, কেষ্টপুর, মাঝপাড়া, ঝাউদিয়া, বাকুলিয়াসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামে। মাঝিলার আজিমুদ্দিনের সঙ্গে সিরাজবাহিনীর ছিলো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কয়েক বছর আগে এক বিকালে আজিমুদ্দিনকে অপহরণ করে একদল সন্ত্রাসী। খাল মাগরার বড়চর শ্মশানের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। গ্রামবাসীর ভাষ্য, এই হত্যার সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)। এরপর অতিক্রান্ত হয়েছিল মাত্র দুটি রাত। অন্যান্য দিনের মতো সেদিন সকাল সকাল খোর্দ আইলচারা হাইস্কুলে এসেছিলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক (৪০)। তখনই সেখানে প্রবেশ করে সিরাজ বাহিনীর সশস্ত্র ক্যাডাররা অস্ত্রের মুখে তারা মাগরার খালের সেই শ্মশানের কাছে নিয়ে হত্যা করে আব্দুল খালেক মাস্টারকে এরপর আরও দুটি লাশ পড়ে মাঝিলায় খালেক মাস্টারের নিকটাত্মীয় জহুরুল এবং গোলাপের লাশে সিক্ত হয় ওখানকার মাটি এ দুজনও খুন হয় সিরাজ বাহিনীর হাতে।
সন্দেহের বশে চিরতরে নিখোঁজ হতে হয়েছে কুষ্টিয়া সদর থানার গোস্বামী দুর্গাপুর গ্রামের অতিসাধারণ দরিদ্র পরিবারের সন্তান বুড়োকে (২২)। ১৯৯৪ সালের ঘটনা এটি বুড়ো সংসার চালাত ডাব বিক্রি করে। গাঁয়ের মানুষের কাছে ‘আধা পাগলা বলে সে পরিচিত ছিল। কিন্তু এই বুদ্ধিহীন সরল যুবককেই সিরাজ বাহিনী সন্দেহ করে বসে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সোর্স হিসেবে। আলমডাঙ্গা বাজার থেকে ফেরার পথে বকশীপুর বাঁশের সাঁকোর কাছ থেকে সিরাজ বাহিনী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এভাবে অনেক মানুষ নিখোঁজ আছেন এখনো। যারা ভাগ্যবান তাদের পরিবার হয়তো লাশ পেয়েছে এ রকম ভাগ্যবানদের একজন ছিলেন বেলগাছি গ্রামের সিদ্দিক। সিরাজের শ্বশুরবাড়ি আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামে তার বাড়ি পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী। গ্রামে আছে বড় একটি পুকুর। যেটি বরাবর লিজ দেয়া হয় মসজিদের নামে ওই জলাশয়ের আয় দিয়ে মসজিদের খরচ চলে। কিন্তু এর ওপর দৃষ্টি পড়ে সিরাজের শ্বশুরবাড়ির পক্ষের আত্মীয় ছলেমান ও অন্যদের। তারা গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয় যে, এবার মসজিদের নামে জলাশয় ডাকা চলবে না। নিজেরাই ডেকে নেবে। এটা সিরাজের নির্দেশ। গ্রামবাসী জোটবদ্ধ হয় এবং সিদ্দিকের ওপর দায়িত্ব পড়ে সে যেন সিরাজের কাছে এই আবেদন পৌঁছে দেয়। এটাই বিপদ ডেকে আনেগ্রামের সবচে জনপ্রিয় সিদ্দিকের ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি সিদ্দিককে অপহরণ করা হয় বেলগাছি থেকে। সিরাজ আত্মসমর্পণের পর জানা যায়, সিদ্দিককে হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা হয় জগন্নাথপুরের ঠান্ডুর জমিতে। কুষ্টিয়া সদরের পটিকাবাড়ি ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের সাহসী যুবক ছিলেন কলি ১৯৯৫ সালের (রমজান ১৩) প্রকাশ্য দিবালোকে সিরাজ এবং তার সহযোগীরা নওদাপাড়া ব্রিজের কাছ থেকে কলিকে অপহরণ করে। মুক্তিপণ দাবি করা হয় ৬০ হাজার টাকা। তারপরও তাকে হত্যা করা হয়। থানার যাওয়ার অপরাধে তাদের বাড়িতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে কলির এক ভাইয়ের জমি লিখে নেয় সিরাজের এক চাচা; তিনি আবার সাবেক চেয়ারম্যান ওই চেয়ারম্যানের নির্দেশে কলির চাচাতো ভাই গনিকে হত্যা করা হয়। কলিকে হত্যা করা হয় নৃশংস ভাবে সে যখন মারা যায়, তখন কলির একমাত্র শিশুপুত্রের বয়স আড়াই বছর।
মিরপুর থানার মালিহাদের মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলী, আমবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম, আব্দুল মতিন ওরফে বাবু সোনা, মোজাম, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, ছোট মুনি, আবুল হাসেম, সবিরন নেছা, হালসার কুদরত আলী, নগরবাঁকার আমীত ম-ল, পাঁচবাড়িয়ার সমের আলী, ভেদামারীর ইসরাইল রহমান, আলম, বামননগরের আলাউদ্দিন, আব্দুর রশিদ, কুরশার নাসের, জহুরুল, শহীদুল, মোফা, ফক্কর আলী, পুটিমারীর সানোয়ার হোসেন, দোধা মন্ডল, মতিয়ার ফকির ও তার স্ত্রী, সুতাইলের কাওসার আলী, নান্দিরার রাকিব ও বাবু, রাজনগরের আব্দুল হামিদ ওরফে সালাম, রমজানপুরের আব্দুল গনি, তেঘরিয়ার আবু বক্কার, মাঝিহাটের জাজু ম-ল, মালিহাদের কুশরত আলী ও মতিয়ার, মেহেরনগরের রহমত ও আয়নাল, পুটিমারীর রোসনাই, গোপনাথপুরের মারফত ও হাবিবুর রহমান, কমলাপুর কুষ্টিয়ার বাহক ম-ল, কুষ্টিয়া শহরের হুর আলী, মাঝিলার আব্দুল খালেক মাস্টার, আইয়ুব কারিগর, আলম, গাজী জহুরুল হক ও রবজেল, গোপালপুরের মনছুর আলী, গজনাইপুরের সোনা মিয়া, খেজুরতলার কাসেম চৌকিদার, জলপাড়ার আল্লা চাঁদ, পটিকাবাড়ির গোলাপ, উসমান, আজিজ ও আকবর, ফকিরাজের গোপাল, হাড়ুলিয়ার মঈনুদ্দিন ও লুৎফর, শঙ্করদিয়ার জানু ম-ল, বিল্লাল হোসেন ও জাবেদ আলী, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার পারকুলার কোরবান আলী, পাইকপাড়ার রফিকুল হাবিলদার, ফিরোজ, রেজাউল, আবু হার, আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার, গওহর আলী চেয়ারম্যান, সহিদুল আলম ও চতুর আলী, আলমডাঙ্গা শহরের ফয়েজ উদ্দিন ও তার শিশুপুত্র রাজীব, ঘোষবিলার বাবুল, বিনোদপুরের মন্টু, শিউলী খাতুন ও বাদল, জগন্নাথপুরের সিরাজুল, রেজাউল ও আনোয়ারুল, ডম্বেলপুরের আলাউদ্দিন, রক্ষিপুরের আফতাব উদ্দিন, তাহের ফকির, আলম, আহম্মদ আলী ও সুরত আলী, বেলগাছির সিদ্দিক আলী, হারিনারায়ণপুরের স্বপন সাহা, ফুলবাড়িয়ার ফকির মোহাম্মদ ওরফে আফাজ, আটিগ্রামের দুজন ছাড়াও মারফত আলীর অন্যতম সঙ্গী আয়নালকেও খুন করা হয়। প্রায় শতাধিক রোমহর্ষক হত্যাকা-ের অভিযোগ রয়েছে সিরাজ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
সিরাজের একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে আলমডাঙ্গা কলেজপাড়ায়। একমাত্র ছেলে লন্ডনে বসবাস করেন, আর স্ত্রী গাজীপুর টঙ্গির নিজবাড়িতে বসবাস করে বলে জানা যায়।