কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় মোকামে কেজিপ্রতি সরু চালের দাম সর্বোচ্চ ৬২ টাকা হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে। যা খুচরা বাজারে ৬৪ টাকায় বিক্রি হবে। গতকাল রোববার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়। বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক মতবিনিময়সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চালকল মালিক, আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ মতবিনিময়সভা করা হয়। সভায় পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদসহ জেলার শীর্ষ মিলমালিকেরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চালকল মালিক ও ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, কুষ্টিয়ার চালকল মালিকেরা খেয়াল খুশিমতো চালের দাম বাড়ান না। উত্তরবঙ্গের কিছু করপোরেট চাল ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়ান। মিলাররা চালের দাম বাড়ান এমন কথা শুধু মিলারদের শত্রুরা বলেন। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, কোনো চালকল মালিক কেজিপ্রতি এক টাকাও লাভ করেন না। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে কুষ্টিয়া জেলার চালকলমালিকেরা ভূমিকা রাখেন। তাদের কাছ থেকে ধান চাল মজুতের পাক্ষিক প্রতিবেদন পাওয়া যায় না। এমনকি গুদামের হালনাগাদ তথ্যও জানতে পারেন না। চালকলমালিক জামশেদ আলী বলেন, বাজারের দিকে সরকারের নজর কম থাকায় নির্বাচনকালীন সময়ে সবধরনের চাল কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে গিয়েছিল। আর রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঘন কুয়াশা ও মেঘলা আবহাওয়াকে চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন চালকলমালিক আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, এই সময়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রচুর ফরমায়েশ দিয়েছিল। দেশ অ্যাগ্রোর মালিক আবদুল খালেক বলেন, চালের দাম কমবে, তবে শর্ত আছে। সেটা হলো ধানের দাম কমতে হবে। আগের দাম ও বর্তমান দামে কেনা ধানের দাম গড় করা হয়। এরপর চালের দাম নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুচন্দন ম-ল বলেন, মিলমালিকেরা ভুল তথ্য দিচ্ছেন। তাদের দেয়া তথ্যের চেয়ে মিলগেটে দুই থেকে আড়াই টাকা বেশি দরে চাল বিক্রি করা হয়। সভায় উপস্থিত লোকজন বলেন, সবার বক্তব্যের পর জেলা প্রশাসক মিলামালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিনিকেট চালের একটা দাম নির্ধারণ করে দেন। যেটা আজ থেকে কার্যকর করবেন। সেই সিদ্ধান্তের বিষয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে। কেজি প্রতি ৬৩ টাকা সর্বোচ্চ দরে বিক্রি করবেন বলে জানান। পরে ৬২-৬৩ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা চলে। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক ঘোষণা দেন, ৬২ টাকার বেশি কেউ মিলগেটে সরু চাল বিক্রি করতে পারবেন না। যা খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৬৪ টাকা দরে বিক্রি হবে। এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে। এই বলে তিনি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.