জীবননগরের দেহাটি গ্রামে বাড়ির রাস্তার জমি নিয়ে দু’ভাইয়ের বিরোধের জের
জীবননগর ব্যুরো/আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: দেবরের কিল-ঘুষি ও লাথিতে মৃত্যু হয়েছে ভাবি শাহারুণ খাতুনের। বাড়ির রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাকে লাথি-ঘুষি মারেন দেবর শাহেদ ওরফে শাহের আলী। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে শাহারুণকে উদ্ধার করে নেয়া হয় হাসপাতালে। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দেহাটি গ্রামে ঘটে। গতকাল শনিবার সকালে নিহত শাহারুণ খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় পুলিশ। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে দেবর-ভাবির হাতাহাতির একপর্যায়ে শাহারুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে রাতেই মরদেহ পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে নেন। পরে হত্যার অভিযোগ উঠলে শনিবার সকালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। নিহত শাহারুন খাতুন (৩৫) জীবননগর উপজেলায় কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি গ্রামের শাহাপাড়ার ভ্যানচালক মোশারফ হোসেনের স্ত্রী। শনিবার সকালে অভিযুক্ত দেবর শাহেদ ওরফে শাহের আলীকে আটক করে জিজ্ঞাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।
জীবননগর থানা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি গ্রামের মৃত মুনতাজ আলীর দুই ছেলে মোশারফ হোসেন ও শাহেদের মাঝে বাড়িতে চলাচলের রাস্তার জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। শুক্রবার বিকেলে শাহেদের সাথে বড় ভাবী মোশারফের স্ত্রী শাহারুণের ঝগড়া বাধে। এর একপর্যায়ে শাহেদ ভাবী শাহারুণকে লাথি মারলে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। শাহারুণকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান শাহারুণ মারা গেছেন। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং রাতে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানাতে নেয়াসহ অভিযুক্ত শাহেদকে আটক করে। নিহত শাহারুণ শাহেদের মামাতো বোন এবং একই গ্রামের কলম মিয়ার মেয়ে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খাশিয়ার রহমান মিঠু বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে ভিটে বাড়ির জমি নিয়ে মোশারফ হোসেন ও তার ছোট ভাই শাহেব আলীর সাথে বিরোধ চলছিলো। মূলত জমি নিয়ে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ ছিলো। পূর্ব বিরোধের জের ধরে তাদের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে শাহারন অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, অনেকদিন যাবত শাহারুন নেছা হার্টের রোগে ভুগছিলেন। এঘটনার পর হয়তো তিনি স্ট্রোক করেছিলেন।
জীবননগর উপজেলার শাহাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জমির হোসেন জানান, জমি দিয়ে বিরোধের একপর্যায়ে শাহেদ তার ভাবীর বুকে লাথি মারলে সে মারা যায়। হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসার পর ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং লাশ দাফনের উদ্যোগ নেয়া হয়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারসহ সুরহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়। তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত দেবর শাহের আলীকে আটক করে জিজ্ঞাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
জীবননগর থানার ওসি আব্দুল খালেক জানান, এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি, তবে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শাহেদকে আটক করা হয়েছে।