স্টাফ রিপোর্টার: করোনায় আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফেরদৌসওয়ারা সুন্না মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহে….রাজেউন)। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ জনে। আরও দুজন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হলেও তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এদিকে চুয়াডাঙ্গায় আরও ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে ২১ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে ৮ জনের নেগেটিভ। নতুন ১৩ জন শনাক্তের মধ্যে সদর উপজেলার ৭জন, জীবননগর উপজেলার ৫জন ও দামুড়হুদা উপজেলার ১জন রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার বলে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বুধবার আরও ৩৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পরীক্ষাগারে প্রেরণ করেছে। এরাও করোনা উপসর্গে ভুগছেন। ফলে সন্দেহভাজন হওয়ায় এদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগে নমুনা পরীক্ষার হার অনুপাতে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ছিলো ১২-১৩ শতাংশ। গতকাল বুধবার ২১ জনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জনে দাঁড়ানোর খবরে দুশ্চিস্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ হিসেবে আক্রান্তের হার ৬১ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গায় নতুন ১৩ জনের করোনা আক্রান্ত দিয়ে মোট কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩৬ জনে। বুধবার জেলায় আরও ৩জন সুস্থ হয়েছেন। ফলে মোট সুস্থ হলেন ২০৪জন। বুধবার শনাক্ত চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৭ জনের মধ্যে জেলা শহরের বাজারপাড়ার একই পরিবারের ৩জনসহ ৪জন, রেলপাড়ার একজন, বেলগাছির একজন ও উপসহকারী মেডিকেল অফিসার একজন। তিনি সম্ভবত ইমাজেন্সিপাড়ার বাসিন্দা। জীবননগর উপজেলার ৫ জনের মধ্যে ধোপাখালীর ১জন, জীবননগর পোস্টঅফিসপাড়ার দুজন, হাসপাতালপাড়ার একজন ও থানাপাড়ার একজন।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা ফেরদৌস ওয়ারা সুন্না গত কয়েকদিন যাবৎ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শরীরে করোনা উপসর্গ থাকার কারণে তিনি অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে গত সোমবার ফেরদৌস ওয়ারা সুন্নার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার সে ফলাফল আসে। রিপোর্টে ফেরদৌস ওয়ারা সুন্নার করোনা পজেটিভ আসে। এরমধ্যে গতকাল বুধবার বিকেলে হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করেন। এসময় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামিম কবির তাকে সার্বিক চিকিৎসা প্রদান শেষে আইসোলেশনে রাখেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন হাসপাতালে ছুটে যান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তার শারীরিক অবস্থার খবরাখবর নেন। এসময় দূর থেকে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুন্না আগের থেকে শারীরিক অবস্থা ভালো বলেই সাবেক মেয়র টোটন জোয়ার্দ্দারকে জানান। কিন্তু এরপর আবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেয়ার প্রস্তুতিকালেই রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দু’ছেলে এক মেয়েসহ বহুগুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস ওয়ারা সুন্না’র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, সহসভাপতি খুস্তার জামিল, সহসভাপতি আশাদুল ইসলাম বিশ্বাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান ও মুফতি মাসুদ উজ্জামান লিটু বিশ্বাস, কোষাধ্যক্ষ আলী রেজা সজল, দফতর সম্পাদক অ্যাড. আবু তালেব বিশ্বাস, উপ-প্রচার সম্পাদক মো. শওকত আলী বিশ্বাস, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আরশেদ উদ্দীন আহমেদ চন্দন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. বেলাল হোসেন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক, সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ