উৎপাদন বাড়িয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমাদের দায়িত্বেরই অংশ
চুয়াডাঙ্গা জেলার দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনময়সভায় সিনিয়র সচিব
স্টাফ রিপোর্টার: বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকলের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শান্তি কামনা করে বলেছেন, ‘দেশের সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৈশি^ক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে জ্বালানি তেলসহ কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ভর্তূকির পরিমাণ সামান্য কমাতে হয়েছে। চলমান মন্দাভাব কখনই স্থায়ী হবে না।’
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলার দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির পর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশে^র বেশিরভাগ দেশেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধকল সামলাতে হচ্ছে। ভোক্তা সাধারণকে। যে সকল দেশে উৎপাদন নির্ভরশীলতা রয়েছে সেসব দেশে বিশ্বমন্দার প্রভাব নেই। এজন্য কোভিড মহামারির মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবারই দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন। তাতে সাড়াও পড়েছে। উৎপাদন বেড়েছে। এরপরও বিদেশ থেকে ইউরিয়া সার ও জ্বালানি তেলসহ যেসব পণ্য আমদানিতে সরকার ভর্তূকি দেয়। তা কিছুটা কমাতে হয়েছে। মূলত ঋণের বোঝা না বাড়ানোর কারণে। এজন্য জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। এই অজুহাতে অনেকে অনেক কিছুর দাম বাড়িয়ে অধিক লাভ করছেন। বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ভোক্তা সাধারণকে। এটা কাম্য নয়। বেশি লাভের বদলে ন্যায় সঙ্গত লাভ করলে সমস্যা থাকবে না। এ জন্য বাজার মনিটরিঙের ওপর অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সিনিয়র সচিব ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিজ নিজ ক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার সাথে কর্তব্যপরায়ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এ দেশ আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমাদের দায়িত্বেরই অংশ।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ৬ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মোহাম্মদ ইশতিয়াক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিছুজ্জামান লালন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান। উপস্থিত থেকে বাজার পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন চুয়াডাঙ্গা মার্কেটিং অফিসার, সহকারী পরিচালক ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক, সার ব্যবসায়ীয় সমিতির সভাপতি মীর মহিউদ্দীন, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বিগ বাজার’র স্বত্বাধিকারী আজিজুল হক, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, ইন্ডিপেনডেন্ড টিভি প্রতিনিধি মানিক আকবর, প্রথম আলো প্রতিনিধি শাহ আলম সনি প্রমুখ। বক্তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয়ভাবে আশু পদক্ষেপ নেয়ার যেমন আহ্বান জানান, তেমনই উৎপাদন বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে নিজ নিজ ক্ষেত্রে আন্তরিক থাকারও প্রতিশ্রুতি দেন। সভার শুরুতে চেম্বারের পক্ষে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে। মতবিনিময় সভার সভাপতি তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, কৃষিপ্রধান জেলা চুয়াডাঙ্গায় খাদ্য উৎপাদন সব সময়ই উদ্বৃত্ত হয়। দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিশেষ অবদান রয়েছে। দ্রব্যমূল্য অন্যান্য জেলার তুলনায় চুয়াডাঙ্গা অনেকটাই ভালো অবস্থায়।