আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা মামলায় গ্রেফতার মেহেরপুরে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই জেলহাজতে
মেহেরপুর অফিস: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন ওরফে মৃদুলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের আবেদন করেন। বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) জুয়েল রানা জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মেহেরপুর দায়রা ও জজ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মানস রঞ্জন দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বেলা দুইটার দিকে আসামি মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সরফরাজ হোসেনকে পুলিশি পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট মেহেরপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় ২৮ আগস্ট শিক্ষার্থী রাশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মেহেরপুর দায়রা ও জজ আদালতে একটি মামলা করেন। এতে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার ছোট ভাই সরফরাজ হোসেনসহ আওয়ামী লীগের ১৬৩ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন ফরহাদের ভগ্নিপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবলু বিশ্বাস, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমাম হোসেন, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুস সামাদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজুর রহমান, মেহেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন প্রমুখ।
মামলার আরজিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৪ আগস্ট মেহেরপুর পৌর শহরে একটি সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে পরদিন ৫ আগস্ট বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণা দেয়ার পরপর জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সরফরাজের নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে যোগ দেয়া শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে লাঠিপেটা করেন। পরদিন দুপুরে ছাত্র-জনতা এক দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আবারও তাদের ওপর হামলা করেন। এতে চার শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
সাবেক মন্ত্রীর ভাইয়ের পক্ষে জামিন শুনানিতে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা অংশ নেন। অন্যদিকে, জামিনের বিরোধীতা করে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। একইদিনে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি পিরোজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের পক্ষের আইনজীবীরা চাঁদাবাজি ও হত্যা চেষ্টা ধারার দুটি মামলায় জামিন চান। মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল ইমাম ওই দুই মামলায় বাবলু বিশ্বাসের জামিন নাকচ করে দেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.