অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট : আহত ৬

জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী জীবননগর উপজেলার সিংনগর গ্রামের সাদিকুর রহমান বকুলের বাহিনী তা-ব চালিয়ে জীবননগর উপজেলার উথলী বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট চালিয়েছে এবং ব্যাবসায়ীদেরকে ব্যাপক মারধর করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বকুলের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জীবননগর উপজেলায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তা-ব চালায়। পরে সন্ধ্যায় জীবননগর থেকে ফেরার পথে উথলী বাসস্ট্যান্ড মোড়ে বকুলের নেতৃত্বে তার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যবসায়ী ও বাসস্ট্যান্ডে মোড়ে অবস্থানরত মানুষদের এলোপাতাড়ি মারধরসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এ সময় বাসস্ট্যান্ড মোড়ের সকল ব্যবসায়ীরা প্রাণের ভয়ে দোকান ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ২০-২৫টি দোকান ভাঙচুর করে এবং নগদ টাকা ও দোকানের মালামাল লুটপাট করে। অস্ত্রের মহড়া চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী তা-ব চালায় তারা। খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে বকুলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (জীবননগর সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বকুলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় উথলী গ্রামের লতিফ আলীর ছেলে রিজু মিয়া (৪৫), একই গ্রামের ওয়াজ বকসের ছেলে সাহাবুল (৩৫) ও এবাদত আলীর ছেলে আসানুর রহমান (৩০) গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। আহতদের উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে রিজুর মাথায় ২৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। সাহাবুলের মাথায় ১০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়া আসানুর রহমানের বাম হাতে ১০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মৃগমারী গ্রামের শহীদ হোসেনের ছেলে তুষার (৩০), উথলী গ্রামের পটলা মিয়ার ছেলে বাবু (৪০) একই গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে জিয়া (৪৫) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। খবর পেয়ে জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান, উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হান্নান ও উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক সোহেল আহম্মেদ প্রদীপ জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আহতদের দেখতে যান। উথলী গ্রামের ট্রাকচালক শাজাহান আলী বলেন, আমি সবজি বোঝাই ট্রাক নিয়ে উথলী বাসস্ট্যান্ডের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় বকুলের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ট্রাক ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। উথলী বাসস্ট্যান্ডের বিকাশ ব্যাবসায়ী তুষার বলেন, হঠাৎ দোকানে এসে বকুলের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার ওপর হামলা করে। আমাকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, হঠাৎ করে বকুলের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী বাহিনী আমার দোকানে প্রবেশ করে দোকানের সব গ্লাস ভাঙচুর করেছে এবং মূল্যবান মালমাল লুট করে নিয়ে গেছে। ব্যবসায়ী আসানুর রহমান বলেন, আমার মোটরসাইকেল গ্যারেজে ১০-১২জন ঢুকে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেছে। দোকানের মোবিলসহ ২ লক্ষাধিক টাকার মালমাল লুট করেছে। উথলী বাসস্ট্যান্ডের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুর রহমান বিশ্বাস বলেন, সাদেকুর রহমান বকুলের নেতৃত্বে ৮০-৯০ জন সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার মার্কেটের ৮-১০ জন দোকানিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। এছাড়া দোকান ভাঙচুর করেছে, দোকানের মালামাল লুটপাট করেছে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুমানিক ১০-১২ লাখ টাকা লুট করেছে। এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ওসি এসএম জাবীদ হাসান বলেন, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More