অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সাক্ষী দেয়াই কাল হলো ইশারনের

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার শিয়ালমারী গ্রামের বৃদ্ধা ইশারন খাতুন মারা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত ইশারন খাতুন (৫৫) আলমডাঙ্গা উপজেলার শিয়ালমারী গ্রামের উত্তরপাড়ার ফজলুর রহমানের স্ত্রী। এর আগে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে নিজ বাড়ির সামনে নির্মমভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ক্ষতস্থানে অসংখ্য সেলাই দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী নেয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নেয়ার পথে ভোরে ইশারন খাতুন মারা যান। এ ঘটনায় ইশারন খাতুনের স্বামী ফজলুর রহমান আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আটক জিন্নাহ আলীকে ঘটনার রাতেই আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ আটক করে। জিন্নাহ আলী একই গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন ম-লের ছেলে। আলমডাঙ্গা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের শিয়ালমারী গ্রামের বানাতখাল মাঠে অগ্নিকা-ের ঘটনায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ভুট্টাক্ষেতসহ পানের বরজ পুড়ে যায়। অভিযোগ ওঠে স্থানীয় চাষি জিন্নাহ আলী তার নিজের ভুট্টা ক্ষেতে আগুন দিলে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এ ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এর সাক্ষী দেন ইশারন খাতুন। এতে জিন্নাহ আলীকে দুই লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘটনার জের ধরে সোমবার রাত ১০টার দিকে বৃদ্ধার নিজ বাড়ির সামনে নির্মমভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন জিন্নাহ। ইশারনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ক্ষতস্থানে অসংখ্য সেলাই দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। রাজশাহী নেয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে মারা যান তিনি। খাদিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহিদুর রহমান জোয়ার্দ্দার লোটাস বলেন, গত ১৩ এপ্রিল উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নে ফসলী মাঠে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় জিন্নাহ আলী নিজের ভুট্টাক্ষেতে আগুন দিলে সেই আগুনে ইউনিয়নের প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ভুট্টা ও পানবরজ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় ইশারন খাতুন সাক্ষ্য দেন। এতে সালিসে জিন্নাহ আলীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরই জের ধরে ওই নারীকে নির্মমভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে ওই নারীর মৃত্যু হয়। পুলিশের তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা বের হবে। আলমডাঙ্গা থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ঘটনার পরপরই আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জিন্নাহ আলীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ফজলুর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।