রাজনৈতিক সম্ভবনার দ্বার বন্ধ হলে মনকষ্টের শেষ থাকে না
………………. ভোলাইনাথ দে পটল …………………..
যখন একদেশ একরেট, মিনিটে ৭ টাকা, তখনও নদীর সাথে চুটিয়ে ফোনালাপ চলতো। খরচ কমলো যখন তখনও। এখন এক বিশ^, এক জালকর্ম। বিশে^র যেখানেই থাকি ফোনালাপে খরচা কমেছে। বেড়েছে সময়ের দাম। মন পড়ে থাকে সবুজে ঘেরা প্রকৃতির প্রান্তরে ছিপছিপে তন্বী নদীর কাছেই। শিশুকালে কূল ঘেষলেই দাদির কড়া শাসন। কৈশোরে কখনো গামছা পরে, কখনো দিগম্বর হয়ে কলাগাছ ধরে নদীর বুকে। সাঁতার শেখা। কত যে দাপাদাপি। সবই স্মৃতিপটে অম্লান। ক’দিন ধরেই ভাবছিলাম, সুযোগ হলেই হোটসঅ্যাপে কল করবো। দেখি অভিমানি কথা বলে কি-না। বোতাম টিপতেই সুরেলা কণ্ঠে হ্যালো। এতোদিন পর মনে পড়লো? বললাম রোজ ভাবি। দিনগুলো মানুষের দেয়া পরিচিত নামেই সামনে আসে, অথচ অচেনা শাসন হয়ে নতুন সময় কেবলই চুষে নেয় আমার রসদ। ক্লান্তি আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। ঘুম থেকে উঠে আবারও নতুন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজের অস্তিত্ব রাখার লড়াই। মাঝে মাঝে নিজেকেই নিজে ভুলে যাই। তো কেমন আছো তুমি?
-ভালো। স্বভাবগতভাবেই ভালো আছি। তোমার দূরন্তপনা আমাকে যেভাবে সুখি করতো, অতোটা সুখি বোধহয় এখন আর নেই। নীরবেই বয়ে চলি। আগে ভাবতাম, নদীর বোধহয় বয়স হতে হয় না। এখন দেখছি আমারও চেহারায় বলিরেখা। বয়সী ভাঁজ।
= বাব্বা, যাকে দেখে নিজেকে কবি ভাবতে ভালো লাগতো, এখন তাকেই কবিত্ব পেয়ে বসেছে দেখছি। কবিতা মানুষকে ভাবতে শেখায়। তুমি কি আমাকে আগের মতোই ভাবো?
-ভাবনা জুড়ে তুমি। বুকে কত কথা জমে। বলবো বলে মুখিয়ে থাকি। ফোন বাজলেই মনে হয়, এই বোধ হয় ফোন করলে তুমি। জানো তো, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে তোড়জোড় চলছে। গত শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের বৈঠকে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে?
= দূরে বসে জানবো কীভাবে? শুধু শুনেছি অনেকদিন হলো জেলা আওয়ামী লীগের সভায় সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ অনুপস্থিত থাকেন। শনিবারের বৈঠকে আজাদুল ইসলাম, আসাদুল হক বিশ^াস উপস্থিত হবে বলে শুনেছিলাম। পরে কী হয়েছে জানি না।
-আজাদুল ইসলাম আজাদ উপস্থিত থাকলেও উপস্থাপক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন নাকি প্রথমে তার নাম ঘোষণা করেননি। এ নিয়ে আজাদুল ইসলাম আজাদ খানেকটা ক্ষোভ উগরে দেন। সভার কর্মসূচি অনুযায়ী বিশেষ দোয়া সম্পন্নের পরে অবশ্য সভার সঞ্চালক বিষয়টি সূধরে নিয়ে আজাদুল ইসলাম আজাদের নাম ঘোষণার সাথে সাথে অসতর্কতার কথাও উল্লেখ করেন। আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, এসব হচ্ছে ইচ্ছেকৃত। তখন অবশ্য সভার সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপিও বেশকিছু কথা বলেন। এক পর্যায়ে আজাদুল ইসলাম আজাদসহ তার সাথে থাকা কয়েকজনের প্রস্থানের তোড়জোড় শুরু হয়। তিনি বলেন, এই পরিবেশে কি থাকা যায়? সভার সভাপতির বক্তব্যে সভাপতি অবশ্য সভায় এ ধরনের অনিচ্ছাকৃত ঘটনার জন্য বিব্রতবোধসহ দুঃখ প্রকাশও করেন।
= তারপর?
-তারপর শুনেছি কেন্দ্রে নালিশ করতে আজাদুল ইসলামসহ তার সাথের কয়েকজন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি নেন। জানি না পরে কী হয়েছে, কী হচ্ছে।
= এক সময় আজাদুল ইসলাম আজাদসহ অন্যরা তো আলাদাভাবেও জেলা আওয়ামী লীগের বৈঠক করতেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির আহ্বানে সভাপতির সাথে সভায় মিলিত হওয়া শুরু হলো কবে থেকে?
-দীর্ঘদিন পর গত শনিবারেরটাই বলতে পারবো। মাঝে কোনো সভায় সাধারণ সম্পাদক যোগ দিয়েছেন কি-না বলতে পারবো না। মাঝে তো দলীয় কর্মসূচি সব আলাদাভাবেই পালন করছিলেন। শনিবারের সভায় যোগদান নিয়েও কিছু প্রশ্ন রয়েছে।
= যাই বলো, জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টা কিন্তু চমৎকার হয়েছে। দেশের মধ্যে জেলা পর্যায়ে দৃষ্টান্ত বটে। ওরকম দলীয় কার্যালয়ে দলীয় বৈঠকে মিলিত হলেও তো ভালো লাগে।
-ঠিকই। শুনছি জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনভাই প্রার্থী হবেন। দলীয় সমর্থনের চেষ্টায় রয়েছেন। ওদিকে সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ, সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আবেদীন খোকনসহ বেশ ক’জন দলীয় সমর্থনের প্রত্যাশায় রয়েছেন। শুনছি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারও প্রার্থিতার কথা ভাবছেন।
= এ ভোট যেহেতু উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, সেহেতু গ্রহণযোগ্য যে কেউই প্রার্থী হতে পারেন। দেখা যাক। এ নিয়ে যতোটা না ভাবছি, তার চেয়ে বেশি ভাবছি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নতুন নেতার অভির্ভাব হবে কি-না তা নিয়ে। দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, রাজ্জাক খান রাজসহ বেশ ক’জন রয়েছেন যাদের জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকার ইচ্ছে থাকাটাই স্বাভাবিক।
-কেন? এরকম ভাবছো কেন? এখনও পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.