চেক ডিজঅনারের মামলা কখন : কোথায় এবং কিভাবে করবেন
অ্যাডভোকেট তুহিন
চেক গ্রহীতা চেকে উল্লেখিত টাকা উত্তোলনের জন্য যথাসম্ভব শিগগিরই অথবা চেকে উল্লেখিত তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে (চেকটির বৈধতার মেয়াদের মধ্যে) চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করবেন। চেকটি ব্যাংকে জমা প্রদানের পর যদি তা অপর্যাপ্ত তহবিল বা অন্য কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে ডিজঅনার হয়; তাহলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিজঅনারের কারণ উল্লেখ পূর্বক চেক জমাদানকারীকে একটি ডিজঅনার সিøপ প্রদান করবেন। ডিজঅনার সিøপ হাতে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধের তাগিদ দিয়ে চেক দাতাকে একটি লিগ্যাল নোটিশ দিতে হবে। তবে এই লিগ্যাল নোটিশ চেকটি ডিজঅনারের তারিখ হতে শুরু করে অবশ্যই ৩০ দিনের মধ্যে দিতে হবে, এই সময়সীমা কোনক্রমেই ৩০ দিনের বেশি হবে না এবং একাধিকবার লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করে টাকা পরিশোধের জন্য চেক দাতাকে ৩০দিন সময় দিতে হবে।
অতঃপর ওই ৩০দিন সময়ের মধ্যে চেক দাতা টাকা পরিশোধ না করলে, উহার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে। যে ব্যাংক কর্তৃৃপক্ষ ডিজঅনার সিøপ প্রদান করবেন, সেই ব্যাংক যে থানা ও আদালতের অধীন সেই থানার অধিক্ষেত্রের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রথম শ্রেণীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। তখন মামলাটি নালিশি মামলা (সি.আর) নামে পরিচিত হবে। তবে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা হলেও বিচার হবে যুগ্মদায়রা জজ আদালতে। তখন মামলাটি সেশন কেস (এস.সি) নামে পরিচিত হবে। চেক দাতা দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১ বছর বিনাশ্রম কারাদ- বা চেকে বর্ণিত টাকার তিন গুন পর্যন্ত জরিমানা দ-ে অথবা উভয় দ-ে দ-িত হবে। রায়ের বিরুদ্ধে দ-িত ব্যক্তি আপীল করতে চাইলে চেকে উল্লেখিত টাকার ৫০% টাকা বিচারিক আদালতে জমা দিতে হবে। ওই টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হয় এবং তার কপি বিচারিক আদালতে দাখিল করতে হবে। রায় ঘোষণার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে দায়রা জজ আদালতে আপিল দায়ের করতে হবে। চেক ডিজঅনারের মামলা বিচারের যেকোন পর্যায়ে আপস করা যাবে। অপরাধের প্রকৃতি এবং শাস্তির পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত প্র্যাকটিস অনুসারে এই ধরণের মামলা জামিনযোগ্য বলেই ধরে নেয়া হয়। তাই আসামি আদালতে উপস্থিত হলে জামিন পেয়ে থাকে।
অ্যাডভোকেট তুহিন
জজ কোর্ট, চুয়াডাঙ্গা।