স্টাফ রিপোর্টার: বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন। সংকটাপন্ন অবস্থায় তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। নিজের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান মিশা সওদাগর। মৃতুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। তিনি এক মেয়ে ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গত ১৩ দিন ধরে প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে অক্সিজেন-স্বল্পতাসহ বেশ কিছু অসুস্থতায় গত ২২ ডিসেম্বর তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আজ সোমবার বাদ জোহর বিএফডিসিতে নামাজে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। ১৩দিন ধরে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক ঘটে। ১৯৮২ সালে তিনি ‘বড় ভাল লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননা বিভাগে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৪ যুগ ধরে ৪০০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
চাঁদপুর শহরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। বংশপরম্পরায় পুরনো ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা প্রবীর মিত্র। তিনি ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠেন। তিনি প্রথম জীবনে সেন্ট গ্রেগরি থেকে পোগজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। তার এক মেয়ে তিন ছেলে। ছোট ছেলে ২০১২ সালে ৭ মে মারা গেছেন। কায়স্থ হিন্দু পরিবারে জন্ম হলেও পরবর্তীতে প্রবীর মিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও বিনোদন সাংবাদিকতার প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)। এক শোক বার্তায় বাচসাস সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ, সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মতিহার বলেন, প্রবীর মিত্রের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রের আরো একটি নক্ষত্রের পতন ঘটলো। তার মৃত্যুতে দেশের চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বলিষ্ঠ অভিনয়ের কারণে তিনি দর্শকদের হৃদয়ে চির অমর হয়ে থাকবেন। আমরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.