স্টাফ রিপোর্টার: চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে সারাদেশেই বেশ গরম পড়ছিলো। দেশের মধ্যাঞ্চলে এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় তাপদাহ বয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বোশেখের এক সপ্তাহ পার হতেই প্রকৃতির মেজাজ বদলাতে শুরু করে। গত বুধবার ভোরে প্রচ- কালবোশেখীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর আবার আঘাত হেনেছে ঝড়। শুক্রবার ছুটির দিনে কালবোশেখী একটু অন্য সময়ে ঝাপটা দিয়েছে। সময়টা বিকেলবেলা। তবে বেশ অল্পস্বল্প সময়ের জন্য। মাত্র আধা ঘণ্টা সময় নিয়ে রাজধানী ঢাকার ওপর দিয়ে কালবোশেখী বয়ে যায়। স্বল্প সময় হলেও এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার। এর সঙ্গে থেমে থেমে মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝরেছে শিলাবৃষ্টি। আবহাওয়া অফিসের মাপকাঠিতে ঝড়ের মাত্রা ছিল ‘তীব্র’। তাৎক্ষণিকভাবে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া না গেলেও কৃষির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবারের কালবোশেখী চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী। এর আগে গত বুধবার ভোরে মরসুমের প্রথম কালবোশেখী সামান্য স্বস্তি দিয়েছিল রাজধানীবাসীকে। সেদিন বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল। ওই ঝড়ে সারাদেশে ছয়জনের প্রাণহানি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার পর থেকে শুরু হয় আবার গরম।
গতকাল শুক্রবার সকালেও ছিল রোদ ঝলমলে আকাশ, বিকেল ৩টার পর আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যেতে থাকে। নেমে আসে কিছুটা আঁধার। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শুরু হয় দমকা হাওয়া। শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাত নিয়ে আসে কালবোশেখী। আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতে বৈশাখের গরমে নাগরিক জীবনে আসে স্বস্তি। তবে পথচলতি মানুষ, গণপরিবহনের যাত্রী আর ছুটির দিনে ঈদবাজার করতে বিপণিকেন্দ্রে যাওয়া ক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়েন।
শুধু ঢাকায় নয়, শুক্রবার দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবোশেখী হয়েছে। অবশ্য ঝড় যে হতে পারে, সে পূর্বাভাস আগেই দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল বিকেল ৩টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর বাতাসের গতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে বিকেল ৩টা ১৮ মিনিটে ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার গতিতে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর অনেক এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, এখন ঝড়-বৃষ্টির মরসুম, এমন আবহাওয়াই স্বাভাবিক। আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে তীব্র কোলােবোশেখী বয়ে যেতে পারে। দেশের অন্যত্র তিন থেকে পাঁচদিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবোশেখী হতে পারে। এ মাসে দেশের কোথাও কোথাও দুই থেকে তিনটি মৃদু তাপপ্রবাহ অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।