স্টাফ রিপোর্টার: মাঠে আন্দোলনরত হেফাজতকে ঘরে নিতেই লকডাউন দেয়া হয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। সেই সঙ্গে স্বাধীনতার পর থেকেই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মধ্যদিয়ে নিজেদের সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে নেতারা লকডাউন চলাকালে অসহায় দরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের সংবিধানসম্মত সব মৌলিক অধিকার হরণ করেছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল রোববার বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের চরম উদাসীনতা, অব্যবস্থাপনা, অযোগ্যতা ও করোনা নিয়ে দুর্নীতির কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভয়ংকর মহামারীর মোকাবেলা করার জন্য দলের নেতাকর্মীসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ বৈঠকে স্থায়ী কমিটির নেতারা বলেন, এবার যখন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছিলো তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ দেশের বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলো স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য নানা পরামর্শ দিয়েছিলো। কিন্তু তা অনুসরণ না করে নানা অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসহযোগী সংগঠন এবং পুলিশের মধ্যে বায়তুল মোকাররম এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২৭ ও ২৮ মার্চ বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, নির্বিচারে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেককে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, অজ্ঞাতনামা আসামির অজুহাতে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। বৈঠকে দলের নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ড শেষে জামিন না দেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে রমজানের আগেই টিসিবির পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও গণপরিবহনের ভাড়া শতকরা ৬০ ভাগ বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে গণবিরোধী হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলা হয়, সরকারের ভ্রান্তনীতি ও ব্যর্থতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। বৈঠকে ভর্তুকির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য হ্রাস এবং গণপরিবহনের ভাড়া কমানোর আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে বৈঠকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ, গণতান্ত্রিক সব অধিকার রক্ষার সংগ্রামকে আরও বেগবান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।