জনপ্রতিনিধি বা যত শক্তিশালী লোকই হোক অপরাধ করলে ছাড় নয়-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার: একঘরে হয়ে পড়েছেন পুরান ঢাকার দাপুটে নেতা এমপি (সংসদ সদস্য) হাজী সেলিম। সরকারি জমিসহ তাদের একের পর এক দখলদারি ও চাঁদাবাজির ঘটনায় বিস্মিত সরকারের হাইকমান্ড। এত অন্যায়-অপরাধ করেও এমপি সেলিম ও তার ছেলে কীভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে-তা নিয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা। এই এমপিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে যারা দখলদারি, চাঁদাবাজিসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ‘কঠোর অ্যাকশনে’ যাওয়ার ‘মেসেজ’ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা হল-‘অপরাধ করলে এমপি হলেও ছাড় নয়।’
ফলে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ছেলে ইরফান সেলিম আটকের পর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় ধরনা দিয়েও সাড়া পাচ্ছেন না হাজী সেলিম। সে কারণে আদালতের বিচারেই ফয়সালা হবে ইরফানের ভাগ্যে কী রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। ইরফান সেলিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সাময়িক বরখাস্ত)। তার বাবা ঢাকা-১৭ আসনের ক্ষমতাসীন দলের এমপি। শ্বশুর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী।
ফলে শুধু বাবার দিক থেকে নয়; বরং শ্বশুরের দিক থেকেও ক্ষমতাধর ছিলেন ইরফান সেলিম। ইরফানের গ্রেফতার অভিযানে যুক্ত র্যাাবের একাধিক সূত্র জানায়, গ্রেফতার করা হতে পারে-এমনটি ভাবতেও পারেননি তিনি। যে কারণেই নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধরের পরও ছিলেন স্বাভাবিক। এ ঘটনার রাতেও বাসায় এসে বিদেশি মদ পান করেছেন। সোমবার রাতে যখন তাকে নিচে নামানো হয়, তখন রাজসিক প্রাসাদ ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ি’র নিচে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখে কিছুটা হতবাক হয়ে যান। এরপর গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো এবং রিমান্ডে যাওয়া-সবকিছুই ছিলো তার কল্পনার বাইরে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে অপরাধমূলক কর্মকা-ে যেই জড়িত থাকুক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাতে সে জনপ্রতিনিধি বা যত শক্তিশালী লোকই হোক না কেন-ছাড় দেয়া হবে না। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধীকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত হয় বা অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা করে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এ সময় তিনি বিভিন্ন অপরাধে পুলিশের ডিআইজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কারাগারে থাকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ