স্টাফ রিপোর্টার: কোনো কিছুতেই থামছে না করোনার ভয়াবহতা। দেশে অনেকটা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। প্রতি চারজনে একজনের বেশি করোনা শনাক্ত হচ্ছে। কঠোর বিধিনিষেধ জারির দিনেই সংক্রমণে ফের রেকর্ড। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮৮২২ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর আগে সোমবার সর্বাধিক ৮৩৬৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে দেশে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯ লাখ ১৩ হাজার ২৫৮। করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার। মাত্র পাঁচদিনে ৫ শতাধিক মানুষের জীবন কেড়ে নিলো করোনা। ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে রোববার দেশে সর্বোচ্চ ১১৯ জন মারা যান। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫০৩। সরকারি হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৫৫০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১৬ হাজার ২৫০ জন। মৃত্যু ও সংক্রমণের সঙ্গে বাড়ছে শনাক্তের হারও। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু এখন শুধু সীমান্তবর্তী এলাকার মধ্যে সীমিত নেই। তা রাজধানীসহ সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে রোগীর ভিড়। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা জেলায় (মহানগরসহ) শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১২ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। গাজীপুরে শনাক্তের হার শতভাগ। ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় ২২ জনের নমুনা পরীক্ষায় সবার মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। নড়াইলে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৭১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫৬৫টি ল্যাবে ৩৫ হাজার ১০৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯২৭টি নমুনা। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৮ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের ৭২ জন পুরুষ আর নারী ৪৩ জন। এদের মধ্যে ৮৭ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে ও ৯ জন বাড়িতে মারা যান। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৫৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১৭ জনের ৪১ থেকে ৫০ বছর, ১২ জনের ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিলেন চারজন। ১৭ জন ঢাকা বিভাগের, ২৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩০ জন খুলনা বিভাগের, দুজন বরিশাল বিভাগের, সিলেট বিভাগে তিনজন, ১১ জন রংপুর বিভাগের এবং ছয়জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ২ হাজার ৮৪০ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৫৯৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ২৯২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৬৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৪৫ হাজার ৭২৮ জন।