আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে বর্তমান পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ
নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হবে আজ
স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে কোনো আইন না থাকায় দেশে তৃতীয়বারের মতো ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ইসি গঠন নিয়ে ২০১১ সালে প্রথম সংলাপ শুরু করেন প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। এবারের সংলাপে রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন ও স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী ইসি গঠনের দাবি জানিয়েছে প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক দল। সংলাপ শেষ হওয়ার আগমহূর্তে এরই মধ্যে সরকার ইসি গঠনে খসড়া আইন মন্ত্রিসভায় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সবমহলে গ্রহণযোগ্য একটি আইন করে ওই আইনের অধীনে নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও শক্তিশালী ইসি গঠনের জন্য দলগুলো নানা প্রস্তাব দিয়েছে। তবে আইনে এসব প্রস্তাব কোনো ভূমিকা রাখবে না বরং আগের মতো সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়া গ্রহণযোগ্য আইনের জন্য সবার সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ বিশিষ্টজনরা। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।’ শুধু তাই নয়, সংবিধানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, সংবিধান ও আইনের অধীন হওয়ার কথাও বলা রয়েছে। কিন্তু অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিগত ৫০ বছরে কোনো সরকারই আইন প্রণয়ন করেনি। ফলে আইনি ভিত্তির মাধ্যমে কোনো কাঠামো ও বাধ্যবাধকতা না থাকায় ইসি গঠনে স্থায়ী সমাধানের জন্য স্বাধীন নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকাল। ফলে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলসহ (জাসদ) মোট ২৪টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেন। তবে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ৮টি রাজনৈতিক দল। সংলাপে অংশ না নেয়া অন্যান্য দলগুলো হলো- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), এলডিপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। মাসব্যাপী রাষ্ট্রপতির এই সংলাপে আইন প্রণয়নসহ নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছে অধিকাংশ দল। কমিশনকে পূর্ণ স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত, যোগ্যতাসম্পন্ন, সৎ, ন্যায়পরায়ণ, নিষ্ঠাবান, নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে দক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নারী ও পুরুষের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করার কথা বলেছে দলগুলো। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাবেক প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি, সাবেক সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান বা সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার ব্যক্তিদের কমিশনে রাখার কথা বলেছে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন বাহিনী থেকে নিয়োগ দিলেই নিরপেক্ষ হবে এটি কোনো সমাধান নয়। সৎ, যোগ্য ও যারা পক্ষপাতদুষ্ট নয় তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এমনকি অনুসন্ধান কমিটিতেও তাদের রাখতে হবে। দলবাজি বা দলের স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে এমন ব্যক্তিদের কোনো বাহিনী থেকে দিলেও তাতে কাজে আসবে না।
নির্বাচন কমিশনকে প্রতি বছর অন্তত চারবার নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার বিধান রাখা, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মতামত না নিয়ে নতুন কোনো নির্বাচনী বিধি-বিধান প্রণয়ন না করা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের বয়েসের একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা নির্ধারণ, বিদেশি নাগরিকত্ব, অবৈধ অর্থ-সম্পদ আছে এমন কাউকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত না করাসহ নির্বাচন কমিশনে নিয়োগপ্রাপ্তদের সম্পদবিবরণী প্রতি বছর জনসমক্ষে প্রকাশ করার কথা বলেছে দলগুলো।
এছাড়া নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ রাখতে তাদের কৃতকর্ম ও ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা রাখার দাবিও জানিয়েছেন নেতারা। দলগুলোর এই দাবি খসড়া আইনে আগের কমিশনের সব কাজের বৈধতা দেওয়ায় উপেক্ষিত হয়েছে বলে মনে করেন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘সরকার রকিব উদ্দিন ও হুদা কমিশনকে বৈধতা দিয়েছে খসড়া আইনের মাধ্যমে। এটা অবিশ্বাস্য ও কল্পনাতীত। যেখানে তাদের দায়বদ্ধ করা দরকার, নাগরিকরা তাদের দায়বদ্ধ করার জন্য রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হয়েছিলেন সেটা না করে তাদের নিয়োগে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। তাদের দায়বদ্ধ করা উচিত।’
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনে দুর্নীতি, অনিয়ম, কারচুপি, গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ তুলে দলগুলো জানিয়েছে, দেশি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কমিশন বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও কমিশনের ভাবমূর্তি অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। তাই কমিশনকে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করা এবং নির্বাচনকে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য (শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের কোনো বিকল্প নেই। এর সঙ্গে জড়িত সব প্রশাসনিক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাও প্রয়োজন।
এছাড়া নির্বাচনকালে দেশের সেনাবাহিনীকে নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগী শক্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে রদবদল, জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়নে, নির্বাচনকালে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াটিকে শতভাগ ত্রুটিমুক্ত করতে স্থায়ী সমাধানের কথা বলেছে দলগুলো। নির্বাচন কমিশনকে একটি আধুনিক ইলেক্টোরাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস) অর্থাৎ একটি আধুনিক নির্বাচন পদ্ধতি গ্রহণ করা দরকার। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য সরকার নির্বাচনে যাতে কোনো হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়ার কথাও বলেছে সংলাপে অংশ নেওয়া কেউ কেউ।
সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন গঠনের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। কোনো আইন না থাকায় স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সবগুলো নির্বাচন কমিশনই সরাসরি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি। সর্বশেষ দুটি কমিশন গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্বপালন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের কথা মাথায় রেখে চলতি মাসের ১৭ জানুয়ারি (সোমবার) ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আয়োজিত মন্ত্রিসভা।
যা আছে ইসি গঠনে নতুন আইনের খসড়ায়: খসড়া আইন অনুযায়ী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। অনুসন্ধান কমিটিও করা হবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে, যারা কমিশনার হওয়ার মতো সেসব প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করবেন তারা। এই অনুসন্ধান কমিটির প্রধান হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। এছাড়া সদস্য হিসেবে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করবে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।
খসড়া আইনে নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতা-অযোগ্যতা: খসড়া আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়, মনোনীত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর হতে হবে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি বা বেসরকারি বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
তবে আদালতের মাধ্যমে কেউ অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হন, দেউলিয়া ঘোষণার পর সেই অবস্থা থেকে মুক্ত না হলে, অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেন বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন, নৈতিক স্খলন ও সেক্ষেত্রে যদি ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দু-বছর কারাদ-ে দ-িত হন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দ-িত হলে, রাষ্ট্রীয় পদে থাকলে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার হতে পারবেন না।
আগামী নির্বাচন কমিশন এই আইনের অধীনে হবে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়। তাছাড়া নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে কতটুকু ভূমিকা রাখবে এই আইন না কি নতুন করে সংকট তৈরি করবে তাও সময়ের অপেক্ষা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ। আইনটি পাস হওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয় থেকে সংসদ, সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পর্যালোচনা শেষে তা সংসদের উত্থাপিত হয়ে আইনটি পাস হলে তা কার্যকর হবে।
সংসদে উঠছে নির্বাচন কমিশন আইন: টানা পাঁচদিন বিরতির পর রোববার বেলা ১১টায় সংসদের মুলতবি অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এই অধিবেশনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত বিল বা খসড়া আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনটি উত্থাপনের পর এটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। সংসদের ওয়েবসাইটে দেওয়া রোববারের অধিবেশনের কার্যসূচি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফল হবে অতীতের মতোই: নাগরিক সংগঠন সুজনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এটি আসলে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন নয়, এটা সার্চ কমিটি গঠনের আইন হয়েছে। এটাতে অতীতে যেরকম হয়েছে আবারও সেরকমই হবে। আম গাছ রোপণ করলে তো আর কাঁঠাল গাছ পাওয়া যাবে না। এই পদ্ধতি হলো নিষ্ফল পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ভিশন হলো- নুরুল হুদা কমিশন আর রকিব উদ্দিন কমিশন। আবারও সেই একই হবে।’ তিনি বলেন, ‘আইনে যে অস্বচ্ছ পদ্ধতি রয়েছে সেভাবে যদি নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী যাকে সুপারিশ করবেন তাকেই নিয়োগ দেবেন। এতে নির্বাচন কমিশন অতীতে যেমন হয়েছিল তেমনই হবে। অনুগত নির্বাচন কমিশনই নিয়োগ হবে।’ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে কোনো মন্ত্রণালয় বা ক্ষমতাই কাজে আসবে না। দলীয় সরকার থাকলে আমরা দেখেছি, সব দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। সব নির্বাচনই পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন হয়েছে, নিরপেক্ষ হয়নি। ফলে নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ থাকতে হবে।’ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের জন্য নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সবার গ্রহণযোগ্য আইন তৈরির জন্য প্রয়োজন সবার সঙ্গে আলোচনা। নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নিরপেক্ষ লোক বের করা দরকার। দায়িত্বপালন করতে দিলে দেখা যায়, কে কেমন করে? কমিশন কীভাবে গঠিত হবে সেটা নিয়ে এখনই বলা যাবে না।’ নির্বাচন কমিশন আইনের বিষয়ে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সরকার আইন করার একটি উদ্যোগ নিয়েছে এটি ভালো। দেখা যাক, কী হয়। সবার সঙ্গে আলোচনা করে ভালো একটি আইন হলে ভালো। নয়তো এটি নিয়ে আবার মারামারি, আলোচনা, নানা কথা শুরু হয়ে যাবে।’ এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ চলাকালে নতুন ইসি কারা হচ্ছেন তা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটি গঠন করে লাভ হবে না। কারা নির্বাচন কমিশনার হবেন- তা এরই মধ্যে লিস্টেড (তালিকাভুক্ত) হয়ে গেছে। সার্চ কমিটি সুপারিশ করলেও তারা কমিশনার হবেন, না করলেও তারাই হবেন।’ সরকারের পছন্দের তালিকাভুক্ত লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলেও মন্তব্য করেন ড. আকবর আলি খান।