স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনায় তারা তাদের দলের পক্ষ থেকে মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি রচনার কথা বলেছেন। কোনো রকম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কাজে দেবে না বলেও বলেছেন। এছাড়া জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নের কথাও বলেছেন বৈঠকে। গতকাল শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাতটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনায় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। জাতিসংঘের ঢাকা অফিস এই আলোচনার আয়োজন করে। এ বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে নাহিদের পাশাপাশি দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনও অংশ নেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই তৈরি করতে হবে বলে তার দল মনে করে। তিনি বলেন, জনগণের কাছে সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি, সংস্কারের যে ধারাবাহিকতা তা বাস্তবায়নের জন্য জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেটাই বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রধানেরা তাদের নিজ নিজ সংস্কার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সংস্কার বিষয়ে তাদের দলীয় অবস্থান তুলে ধরেছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি মনে করে জনগণের কাছে বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি হলো বিচার ও সংস্কার। তাই মৌলিক সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই তৈরি করতে হবে। সংবিধান সংস্কার নিয়ে এনসিপির অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, সংবিধান সংস্কার বিষয়ে আমাদের অবস্থান হলো, গণপরিষদের মাধ্যমেই সংস্কার করতে হবে, অন্যথায় সংসদের সংবিধান সংস্কার টেকসই হবে না, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকেও এটাই দেখতে পাই। আমরা আমাদের এই দলীয় অবস্থান সংক্ষেপে বলেছি। জাতিসংঘ মহাসচিবের চাওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার যেন নিজেরাই সমঝোতায় আসে, একটা ঐক্যমতে আসে এবং একসঙ্গে কাজ করেন। নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা মনে করি এবং বলেছি, নির্বাচনকে আমরা একটি সংস্কারের প্রক্রিয়া হিসেবে দেখি, সংস্কারের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখি। কোনো রকম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কাজে দেবে না। অন্য সব রাজনৈতিক দলও এই কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। এখানে মতপার্থক্য হচ্ছে, কোন সংস্কারটা কখন হবে, নির্বাচনের আগে কতটুকু হবে, নির্বাচনের পরে কতটুকু হবে। আমরা মনে করি, জুলাই সনদের মধ্যে এর বাস্তবায়ন হলে যে মতপার্থক্যগুলো আছে, সেগুলো কেটে যাবে। আমরা ঐক্যমতে আসতে পারব। সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কি না জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, এখানে বিস্তারিত আলাপের সুযোগ ছিল না। সংস্কার বিষয়ে সামগ্রিক আলোচনা হয়েছে। গণপরিষদ ছাড়া সংবিধানের মৌলিক কোনো পরিবর্তন টেকসই হবে না বলে মনে করে এনসিপি। সেই জায়গা থেকে আমরা গণপরিষদ নির্বাচন চাচ্ছি। সামনের যে জাতীয় নির্বাচন, সেটা একই সঙ্গে আইনপরিষদ ও গণপরিষদ নির্বাচন, পাশাপাশি আমরা বিচারের বিষয়টা বলেছি। বিচারের বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের কাছে বিচার ও সংস্কার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি। ধন্যবাদ জানিয়েছি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.