স্টাফ রিপোর্টার: ষষ্ঠ ধাপে ২১৮ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ আজ। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ হবে। এ ধাপে ২১৮ ইউপির মধ্যে ২১৬ ইউপিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। এ ধাপের ভোট সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মাঠে রয়েছেন পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা।
এদিকে বিগত পাঁচ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার পরে আজকের ভোট নিয়ে শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ভোটার ও প্রার্থীরা। গতকাল নির্বাচন পরবর্তী আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদী রায়পুরার বাঁশগাড়ী ও মির্জাচরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সহিংসতা ঘটছে। অনেক এলাকায় ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক কাজ করছে ভোটারদের মধ্যে। সব মিলে এ পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে ১২১ জনের প্রাণ হানি ঘটেছে। ইসি জানিয়েছে, ষষ্ঠ ধাপের ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ১৪৪ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ১২ জন, সংরক্ষিত সদস্য ৩২ জন এবং সাধারণ সদস্য ১০০ জন বিনোভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ধাপের ভোটের লড়াইয়ে আছেন ১১ হাজার ৬০৪ জন প্রার্থী। চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ১৯৯ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ২ হাজার ৫৫৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৭ হাজার ৮৪৬ জন। গতকাল ভোট কেন্দ্রে ইভিএমসহ নির্বাচনী মালামাল পাঠিয়েছে ইসি। শনিবার মধ্যরাতে এসব নির্বাচনী এলাকায় প্রচারের সময় শেষ হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার শেষ দিনে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সহিংসতা হয়েছে, প্রাণ হারিয়েছেন একজন। গতকালও নির্বাচন পরবর্তী সংঘাতে প্রাণ গেছে দুজনের। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পরেও তারা থাকবেন। সেই সঙ্গে মাঠে রয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেটও। এ ধাপের মোট ভোট কেন্দ্র ২ হাজার ১৮৬টি। ভোটকক্ষ ১৩ হাজার ৩০৫টি। এ ধাপে মোট ভোটার সংখ্যা ৪১ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন ও পুরুষ ২১ লাখ ১৪ হাজার ৭২০ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ ছয়জন ভোটার রয়েছেন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। তবে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট না থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। ইউপি ভোটকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু নির্বাচনী এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামলে রাখতে নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। পাশাপাশি সব পক্ষের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ইউপি প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর, তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর, চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর, পঞ্চম ধাপে ৫ জানুয়ারি ভোট হয়। আজ ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে ২১৮ ইউপিতে ভোট হবে। এ ছাড়া সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপিতে ৭ ফেব্রুয়ারি এবং অষ্টম ধাপে ১০ ফেব্রুয়ারি ৮ ইউপিতে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ