স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছে শীতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে উল্লেখ করে এই মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। ৩৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ ফান্ডে অনুদান গ্রহণকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। আমাদেরকে এই মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এই অনুদান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) প্রাঙ্গণে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। করোনা মোকাবেলায় জাতির সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এই আর্থিক অনুদান দেয়ার জন্য শেখ হাসিনা সংগঠনগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘সবাই এই পরিস্থিতিতে (করোনাকালে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে) অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। আর এ জন্যই আমরা এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি।’ কোভিড-১৯-এর অভিঘাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে মুক্ত রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণাসহ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি সচল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি এবং যেখানে যা প্রয়োজন তাই দিয়েছি। কারণ জনগণের সেবা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
দেশের যে কোনো সঙ্কটে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) তাদের হাত বাড়িয়ে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকগুলো যাতে যথাযথভাবে তাদের কাজ করতে পারে, সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার জন্য বিএবিকে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু ব্যাংক খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। অনেক সময় মার্জ করতে হয়। তবে, কোন ব্যাংক ঠিকভাবে চলছে, কোনটা সঠিকভাবে চলছে না, সেগুলো বিবেচনা করেই করা হবে। আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন, মূল্যায়ন না করে এ ব্যাপারে কিছুই করা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রথম বেসরকারি খাতে ব্যাংক খোলার উদ্যোগ নিয়েছে এবং তারা বেশিরভাগ বেসরকারি ব্যাংক পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন, যার ফলে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষকদের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে মানুষকে ব্যাংক ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তোলারও উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাই, আমরা চাই যে, ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে তাদের কাজ পরিচালনা করবে। আপনারা যেসব যৌক্তিক দাবি আমার সামনে এনেছেন, তা আমরা সব সময় বিবেচনা করেছি। ব্যাংক পরিচালনায় কোনো সমস্যা থাকলে, তা আমি বিবেচনা করবো।’
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকের (বিএবি) নেতৃত্বে ৩৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক-এবি ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্ ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক (বিডি) লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, এসবিএসি ব্যাংক লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড ও উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড।
এ ছাড়া আরও ৮টি সংস্থার মধ্যে রয়েছে- ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফুড, এফওএসএ (ফরেন অফিসার্স স্পাউস অ্যাসোসিয়েশন), রাজশাহী মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ আর্কিটেক্ট ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল এপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন এবং মিনিস্টার গ্রুপ।