স্টাফ রিপোর্টার: চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে ফোনালাপে মহানগর গোয়েন্দার (ডিবি) নাম উল্লেখ করার কারণে ওই প্রতিষ্ঠানে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারেন সদ্য পদত্যাগপত্র জমাদানকারি তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান। এ বিষয়ে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীকেও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। মাহী বর্তমানে ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরব রয়েছেন। তবে কবে নাগাদ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্মকমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি অন্য কোনো বাহিনীর কথা বলবো না। যেহেতু তিনি (ডা. মুরাদ হাসান) ডিবির কথা উল্লেখ করেছেন, প্রয়োজনে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
অডিও কলের রেকর্ডটি কীভাবে ফেসবুকে ছড়িয়েছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ যদি অভিযোগ দায়ের করে এবং আমাদের ডিবি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কোনোকিছু ভাইরাল হলে আমাদের ডিবির সাইবার ইউনিট দেখভাল করে ও তদন্ত করে।’
সেদিন মাহী ও মুরাদের ফোনালাপের পর ধর্ষণ সংগঠিত হয়েছিল কিনা? এমন এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমরা প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই কথা বলবো।’
হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জের ধরে নায়িকা মাহিয়া মাহীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তবে তিনি বিদেশে থাকায় তাকে এ বিষয়ে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। তিনি দেশে ফিরলেই তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। এছাড়া মাহী দেশে না থাকায় অভিনেতা ইমনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।
এর আগে সোমবার রাতে ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় ডিবি। প্রায় ৩০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইমন সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টু রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান।
সদ্য ভাইরাল হওয়া একটি ফোনকলে শোনা যায়, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যেতে বলেছিলেন সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দেয়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। যদি মাহী নিজ ইচ্ছায় সেখানে না যায়, তাহলে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে তুলে আনার হুমকি দেন তিনি।
ফোনকলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব সংস্থাকে ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন, এর মধ্যে অন্যতম ছিল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আর ডিবির নাম উল্লেখ করায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হবেন তিনি।
বেশ কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায়-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ভেতর-বাইরে আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে।
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
ডা. মো. মুরাদ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসনে থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দপ্তর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন নায়ক ইমন
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ