মানসিকভাবে ফুরফুরে খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার: লন্ডনের প্রায় শত বর্ষের প্রাচীন লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্ষানিকটা উন্নতি হয়েছে। তার স্বাস্থ্যের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রায় শেষ পর্যায়ে। রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। ঢাকা থেকে যাওয়া মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’-এ কার্ডিওলজিস্ট, আইসিইউ স্পেশালিস্ট, ইন্টারন্যাল মেডিসিন স্পেশালিস্ট এবং ফিজিওথেরাপিস্টসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তারা আরো কিছু পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে।
লন্ডন সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থা ফুরফুরে। দীর্ঘদিন পর তিন নাতনিকে একসঙ্গে পেয়ে হাসি খুশি-উৎফুল্ল হয়ে উঠেছেন। হাসপাতালে দাদির সঙ্গে বিছানার পাশে সময় কাটাচ্ছেন বড় নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান। বড়পুত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পুত্রবধু ডা. জুবাইদা রহমান বেশীরভাগ সময় থাকছেন সেখানে। নিয়মিত বাড়ী থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে মা-কে খাওয়াচ্ছেন তারেক রহমান। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রভাত বেলা মাইনাস তাপমাত্রার মধ্যে হাড় হিম করা কনকনে শীত উপেক্ষা করে লন্ডন ক্লিনিকে যাচ্ছেন তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরেফ) ইউরোপের সমন্বয়ক কামাল হোসেন।
লন্ডনে এক ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ম্যাডাম লম্বা জার্নি করার পরও অনেকটা সুস্থ আছেন। কারণ তিনি দীর্ঘদিন পর পরিবারের সান্নিধ্য পেয়েছেন। ভর্তির পর থেকে বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসনের। কয়েকটির রিপোর্টও এসেছে। এগুলো পর্যালোচনা করে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। আরো কয়েকদিন মেডিকেল বোর্ড আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেবেন। যে উদ্দেশ্যে ম্যাডাম লন্ডনে এসেছেন সেই লিভার প্রতিস্থাপন করা যায় কি না। আরো উন্নত চিকিৎসায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে কি না জবাবে তিনি বলেন, লন্ডন ক্লিনিকে অনেক উন্নতমানের চিকিৎসা হয়। এখানকার চিকিৎসকরা জগিবখ্যাত। মনে হয় না ম্যাডামকে অন্য কোথাও নেয়ার প্রয়োজন পড়বে। তবুও বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যুক্তরাজ্য বিএনপির একজন নেতা বলেন, ম্যাডাম ছেলে ও নাতনিদের কাছে পেয়ে মানসিকভাবে বেশ আনন্দিত। হাসপাতালে প্রতিদিন ছেলে তারেক রহমান ও দুই পুত্রবধূ আসার যাওয়ার মধ্যে আছেন। ডা. জুবাইদা রহমান বাসা থেকে শাশুড়ির জন্য রান্না করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুয়ায়ী তিনি প্রতিদিন খাবার পরিবেশন করছেন। তিন নাতনি দাদির সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন বড় নাতনি জাইমা রহমান। তিনি তো ম্যাডামের কলিজার টুকরা। কারণ তাকে সাত বছর পর দেখেছেন। ম্যাডামের মরহুম ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দুই মেয়ে ঢাকায় কয়েকবার গিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে ম্যাডামের আগেও দেখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন হাসপাতালে থাকছেন। মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা রাত ১০-১১টার পর বাসায় চলে গেলেও প্রতিদিন হাসপাতালে থেকে যান ডা. জাহিদ। চিকিৎসক ও সফরসঙ্গীরা হাসপাতালের পাশেই হোটেল থাকছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More