স্টাফ রিপোর্টার: নবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে রাজনৈতিক অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি আংগোভেনকের সঙ্গে বৈঠককালে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল এ কথা জানায়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে রাজনৈতিক অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আমরা জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছি। তাদেরকে বলেছি, এটা একটা পলিটিক্যাল ক্যাম্পেইন। তিনি বলেন, স্থিতিশীলতা ও ডেমোক্রেটিক প্রসেসকে কনটিনিউ করার জন্য শুধু সরকার নয়, সবাইকেই কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা জানিয়েছি-আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পলিটিক্যাল ভায়লেন্সের শিকার। পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং ২১ আগস্টে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের লিডারশিপকে হত্যাসহ অন্যান্য ঘটনাও আমরা তদের বলেছি। আর তারা বলেছে-বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধি হয়েছে, সেখানে মানবাধিকারকে শুধু একভাবে দেখলে হবে না। সার্বিক যে একটা বড় ক্যানভাস অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার, যা জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। এই দুই ধরনের অধিকার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই কিন্তু বাংলাদেশে অনেক সাফল্য রয়েছে। এটা তারাও বলেছে। এগুলো নিয়ে তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছে। তারা বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক আশাবাদী। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল এটাও বলেছে, পৃথিবীর সব দেশেই মানবাধিকার নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরেছি। জাতিসংঘের যিনি প্রতিনিধি তিনি আমাদের দেশের এই বিষয়গুলোর অর্জনের প্রশংসা করেছেন। আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে যে আমাদের মান ও দক্ষতা উন্নত হচ্ছে, এগুলোও কিন্তু জাতিসংঘ প্রণীত মানবাধিকারের যে ব্যাখ্যা সেটার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি সরকার অনেক বেশি জবাবদিহিতামূলক হবে। স্বচ্ছ হবে। এই কাজটা আমরা বারবার করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে এটাও তাদের সামনে তুলে ধরেছি চরমপন্থি উগ্রবাদী যে রাজনৈতিক শক্তিটা বাংলাদেশে আছে, উগ্র বাম এবং উগ্র ডান-আমাদের প্রগতিশীল সরকারের বিরুদ্ধে তাদের একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা রয়েছে। যারা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছে, তারা কিন্তু এখনো রাজনীতিতে আছে, তাদের রাজনৈতিক প্রতিক্রয়ার মাধ্যমেই প্রতিহত করতে আমাদের কাজ করতে হয়। বৈঠকে এগুলোও তাদের বলেছি। শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকতে হবে, জবাবদিহিতার মধ্যে আনা। ডিসিপ্লিন প্রসেসের মধ্যে আনা। সেটা কিন্তু রাতারাতি আসত না। সেটা প্রক্রিয়াধীন বিষয়। প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে সেই সক্ষমতা অর্জন করে। সেই সক্ষমতা অর্জনে জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাবে। বৈঠক সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তা-বের ঘটনায় পুলিশি অভিযানের সময় ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর দেয়া প্রতিবেদনকে অস্বচ্ছ ও প্রমাণবিহীন হিসাবে তুলে ধরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তারা জানান, এ রিপোর্ট প্রকাশের পর একই বছরের ১ জুন তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে সংগঠনটির কাছে ৬১ জনের ঠিকানা চাওয়া হলে তা তারা দিতে পারেনি। তথ্য-প্রমাণে মেলেনি মৃতের সংখ্যার। এতে অধিকারের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করলে এনজিও ব্যুরো সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল করে। সেই অধিকারকে তথ্যসূত্র হিসাবে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশকে নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ