স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আরিফুল ইসলাম (৩৩) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার ভোরে শ্যামকুড় সীমান্তের ওপারে ভারতের পাকুড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত তার মরদেহ ভারতের অভ্যন্তরে পাখিউড়া মাঠে পড়ে ছিল। নিহত আরিফুল ইসলাম শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার মৃত আফেজ উদ্দিনের ছেলে। আরিফুলের মরদেহ ফেরত আনার বিষয়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক অমীমাংসিতভাবেই শেষ হয়েছে। বিএসএফ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া বাংলাবান্ধায় মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলনের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ফরিদ (২৪) নামের এক পাথর শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
ঝিনাইদহ বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ রানা বলেন, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এ খবরের ভিত্তিতে ভারতের পাখিউড়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিএসএফ মরদেহ দেখাতে না পারায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি এটি বাংলাদেশি নাবি? না ভারতীয় কারও দেহ। এ বিষয়ে শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান জামিরুল ইসলাম বলেন, পতাকা বৈঠকে আমিও ছিলাম। কিন্তু বিএসএফ আমাদের মরদেহ ফেরত দেয়নি। তারা বলেছে, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবে। তারা যদি নির্দেশ দেয় তাহলেই দেহ হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, শ্যামকুড় গ্রামের আরিফুলসহ চার থেকে পাঁচ যুবক ভারতে গরু আনতে গিয়েছিলেন। বুধবার ভোরে গরু নিয়ে ফেরার সময় ভারতের পাখিউড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা দেশটির অভ্যন্তরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরিফুল নিহত হন। এছাড়া তার সঙ্গে থাকা অন্যদের এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে আরিফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া বাংলাবান্ধায় মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলনের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ফরিদ (২৪) নামের এক পাথর শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার সকালে বাংলাবান্ধা ইউপির জায়গীরজোত সীমান্ত এলাকায় ৭৩১ মেইন পিলারের ৭ আর সাব পিলার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। আহত পাথর শ্রমিক ওই এলাকার তমিরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, সকালে সীমান্ত নদী মহানন্দায় পাথর তুলতে যান ফরিদ। মহানন্দায় পাথর উত্তোলনের সময় বিএসএফের ১৭৬ ব্যাটালিয়নের জালাসী ক্যাম্পের বিএসএফ এক সদস্য বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে গুলি করে। গুলিটি ফরিদের ডান পায়ে লেগে বাঁ-পা দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে নদীর পানিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগ থেকে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে সেখান উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল মাহফুজুল হক বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি জিরোলাইনে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে।