ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে যাবে ব্যালট

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। পার্বত্য এলাকা, হাওড়, চরাঞ্চলসহ জেলা-উপজেলা-মহানগর থেকে বেশি দূরে অবস্থিত কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পাঠানো সম্ভব হবে না। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যালট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। সোমবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো পরিপত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে নির্বাচনের কয়েক দিন আগে সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী দল প্রতি জেলায় নামতে পারে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে ভালো হতো তা সবাই ফিল করে। সোমবার নির্বাচন ভবনে সিইসি বলেন, সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হলে নির্বাচনে স্বচ্ছতা বাড়বে। তিনি বলেন, এটা অনেকের দাবি ছিল। ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাওয়ায় স্বচ্ছতা বাড়াবে। সিইসি বলেন, আমরা অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যতদূর সম্ভব ভোটগ্রহণ শুরুর আগে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। তবে কিছু কিছু এলাকা সকালে সম্ভব হবে না। যেগুলো দুর্গম-দূরবর্তী, হাওড়-বাঁওড় এলাকা অথবা যেখানে জলপথে যেতে হয় সেখানে পাঠানো সম্ভব হবে না। এছাড়া দ্বীপাঞ্চলেও সম্ভব হবে না। এজন্য একটা পরিপত্র জারি করেছি। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বৈঠকের পর সিইসি এসব কথা বলেন। এ সময় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে ভালো হতো বলেও মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এটা ঠিক যে, একটি গুরুত্বপূর্ণ দল নির্বাচনে পার্টিসিপেট (অংশগ্রহণ) করছে না। পার্টিসিপেট করলে ভালো হতো, এটা সবাই ফিল করে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমি সেই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। সেটি নির্বাচনের পরে দেখা যাবে। জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে জাপান অবজারভেশন (পর্যবেক্ষক) টিম পাঠাবে। তাদের কিছু পর্যবেক্ষক জাপান থেকে আসবেন। বাকিরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপান অ্যাম্বাসির স্টাফ। তারা আমাদের নির্বাচনকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেজন্য অবজার্ভ করতে চাচ্ছেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। সিইসি বলেন, সব দেশ আমাদের নির্বাচন সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। আমাদের ডোনার কান্ট্রিজগুলো নির্বাচন দেখতে চাচ্ছে। সেটাকে চাপ বলেন বা এটা সেন্সেটাইজেশন বলেন, ওরা যে সব দৌড়ঝাঁপ করছে আমরা দেখেছি এবং যার ফলে সরকারও বারবার বলেছে যে, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে। আমাদের তরফ থেকেও আমরা বলেছি যে, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটিতে একজন মেম্বার এবং কমিটি অব নেশনসে আমরা সদস্য। আন্তর্জাতিকভাবেও নির্বাচনটা সুন্দর হোক, সুষ্ঠু হোক, বহির্বিশ্বেও নির্বাচন ভালো গ্রহণযোগ্যতা পাক সেই প্রত্যাশা সবার মতো আমাদেরও আছে। আমরা আমাদের তরফ থেকে নির্বাচনটাকে ফ্রি, ফেয়ার এবং পিসফুল এই তিনটা জিনিসের ওপর আমরা খুব জোর দিয়েছি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন নিয়ে স্বস্তি বা অস্বস্তি কোনোটিই আমার মধ্যে নেই। আমার দায়িত্বটা হচ্ছে আমাদের নির্বাচনটা যেভাবে করতে হয়, আমরা সরকারের সহায়তা নিয়ে অর্থাৎ পুলিশ, প্রশাসন সবার সহায়তা নিয়ে সেভাবে করতে চাচ্ছি। আমার ব্যক্তিগত স্বস্তি ও অস্বস্তি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এটা ঠিক যে, নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল পার্টিসিপেট করছে না। পার্টিসিপেট করলে ভালো হতো। আপনারা জানেন যে আমরা প্রথম থেকেই তাদেরকে আহ্বান জানিয়েছিলাম যে আপনারা অংশগ্রহণ করুন, তারা সাড়া দেননি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, যেটা আগে বলেছি, ওই দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচনটা আরও অনেক বেশি ইনক্লুসিভ ও পার্টিসিপেটরি হবে। অংশগ্রহণ করলে ভালো হতো এটা সবাই ফিল করে।
যেসব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা প্রতিরোধের কর্মসূচি দিচ্ছে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রতিহত যদি উনারা করতে চান, সেটা উনাদের ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য দেব না। আমরা চাইব ইলেকশনটা পিসফুলি হোক। নির্বাচন নিয়ে জাপানের কোনো পরামর্শ ছিল কি না? জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, না, এ ব্যাপারে জাপানের কোনো পরামর্শ ছিল না।
২৯ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াতসহ) সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায়। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বরাবর চিঠি দিয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে নির্বাচনি এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনি পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী দল পাঠানো যেতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনি কাজে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকার ‘নোডাল পয়েন্ট’ এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More