কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ধূমপানকা-ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জিনিয়া খাতুনের আত্মহত্যার ঘটনায় তিন শিক্ষকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে কুমারখালী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন নিহতের মা শান্তা খাতুন। আসামিরা হলেন উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু (৪৫), ওলিউর রহমান অলিদ (৫০), মাহবুবা খাতুন (৪০) ও আয়া শিউলি খাতুন (৪২)। ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে। তবে আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি আকিবুল ইসলাম। বাদী শান্তা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে কোনোদিন সিগারেট টানেনি। শিক্ষকরা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দুই ঘণ্টা শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেন। অপমান সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি ন্যায় বিচার চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের খোঁজ নেয়নি। উল্টো প্রধান শিক্ষক মরদেহ দেখতে এসে বিদ্রুপ করেন এবং শাসন করে শিক্ষকরা অন্যায় করেননি বললে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে মারধর করে।’সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বিদ্যালয়ে ছিলাম না। অফিশিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় প্রথম দিন খোঁজ নিতে পারিনি। পরের দিন বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কমিটি করে মেয়েটির জানাজা নামাজে গেলে হামলার শিকার হই। কেন মারধর করেছেন, আমি জানি না। এ ঘটনায় মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ।’ এদিকে বুধবার বিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সভা করে জেলা বেসরকারি শিক্ষক সমিতি প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়। একই সঙ্গে মানববন্ধন কর্মসূচি দিলেও গতকাল বৃহস্পতিবার তা করতে পারেনি। জেলা বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান জানান, জেলা পর্যায়ে আন্দোলন করার জন্য মানববন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম স্বপন জানান, ছাত্রীর আত্মহত্যা এবং প্রধান শিক্ষককে মারধরে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। গত সোমবার কুমারখালীর সুলতানপুর মাহতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাদে উঠে পাঁচ ছাত্রী ধূমপান করে। বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষকরা তাদের ভিডিও ধারণ ও শাসন করে এগুলো অভিভাবকদের মধ্যে ছড়ানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে দুই ছাত্রী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাদের জীবিত উদ্ধারে সক্ষম হলেও বিকেলে বাড়ি ফিরে জিনিয়া খাতুন গলায় ফাঁস নিয়ে মারা যান।