স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালের নির্বাচন ছিলো গভীর চক্রান্তের। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট বেশি পেয়েছিলো কিন্তু ক্ষমতায় বসতে পারেনি। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল ছিলো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, লুটপাট সব মিলিয়ে দেশে আরেকটি কালো অধ্যায় শুরু হয়েছিলো। বিএনপির সময় দুর্নীতিই ছিলো নীতি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে তখনই মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নিজেকে জনগণের সেবক মনে করে এবং সেভাবেই কাজ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক ধারাবাহিকতাই ছিলো অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ উপায়ে। জেনারেলের পকেট থেকে বিএনপির জন্ম। মাটি ও মানুষ থেকে জন্ম হয়নি। সব সময় মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে বিএনপি ছিনিমিনি খেলেছে। তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ ছিলো না। সে সময় বিএনপির সব পছন্দের লোক ক্ষমতায় থাকার পরও দলটি ৩১টি আসন পায়। এমন দল জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসবে-এটা বিএনপির নেতারা কিভাবে মনে করেন? বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যে দলের নেতা বিদেশে টাকা পাচারের জন্য শাস্তি পেয়েছে। গ্রেনেড হামলায় শাস্তি পেয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে যে নেতা জড়িত। মুচলেকা দিয়ে যে দেশ ছেড়েছে। দেশের যে টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে। এখন সেই টাকা দিয়ে বিদেশে দেশের বদনাম করছে। বিদেশে বসে সে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সে আবার টাকা পাচার নিয়ে কথা বলে। জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে-এ স্বপ্ন তারা কিভাবে দেখে? প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধী অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার জন্য জামা-কাপড় ইস্ত্রি করে বসেই থাকেন। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাদের মূল্য বাড়ে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চললে তাদের হতাশা লাগে। তাদের জ্ঞান-বুদ্ধিকে দেশের কল্যাণের কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের চোখ আছে তারা উন্নয়ন দেখবে। আর বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধীরা কোনো উন্নয়ন দেখে না। নির্বাচিত সরকার হটিয়ে অনির্বাচিত কাউকে ক্ষমতায় আনলে দেশের কোনো ভালো হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর তার সভাপতিত্বে সভায় মূল আলোচনা শুরু হয়। সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। শনিবার অনুষ্ঠেয় দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে এটাই দলের শেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা। ফলে অনেকের জন্য এটাই হয়তো হতে যাচ্ছে শেষ কার্যনির্বাহী সভায় অংশগ্রহণ। সূত্র জানায়, অনুমোদনের জন্য সভায় দলের গঠনতন্ত্র সংশোধনীর খসড়া উপস্থাপন করা হয়। কাউন্সিলের আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করা হয়। দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট সভায় উপস্থাপন করেন। রীতি অনুযায়ী আলোচনা শেষে কার্যনির্বাহী সংসদের এ বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। জাতীয় সম্মেলেনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক মুলতবি থাকবে। তবে এর মধ্যে প্রয়োজনে যে কোনো সময় মুলতবি সভা ডাকতে পারেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
পূর্ববর্তী পোস্ট
দর্শনায় বিজয় মেলার মাঠে দুই গ্রুপের উত্তেজনা : যুবককে পিটিয়ে জখম
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ