বাধা-চাপ তবুও খুলনায় বড় সমাবেশের প্রস্তুতি বিএনপি’র
বাড়ি বাড়ি অভিযানে মাইক ভাঙচুর : পুলিশকে দলীয় কাজে ব্যবহারের নিন্দা
স্টাফ রিপোর্টার: সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনা বিভাগে ২ দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ধরপাকড় করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগও আছে। এমন অবস্থায়ও খুলনার বিভাগীয় সমাবেশে বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নানা উপায়ে বিকল্প মাধ্যমে তারা আসবেন সমাবেশে। দূরের জেলার অনেকে ইতোমধ্যে খুলনায় চলে এসেছেন। আজ এবং সমাবেশের দিন সকালে পর্যায়ক্রমে নেতাকর্মীরা আসবেন সমাবেশ সফল করতে। সমাবেশ সফল করতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা নেতাকর্মীদের নিয়ে একের পর এক বৈঠক করছেন। নেতারা জানিয়েছেন, তারা আশাবাদী সব বাধা পেরিয়ে নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ সমাবেশে হাজির হবে। ওদিকে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে ২২শে অক্টোবরের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। নেতাকর্মীরা যতই আঘাতপ্রাপ্ত হোক, জন উৎসাহ কোনোক্রমেই ঠেকানো যাবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, প্রিয় নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং পাঁচ সহকর্মী হত্যার বিচার আদায় করেই আমরা ঘরে ফিরবো। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদু। তার অভিযোগ, বিএনপি’র কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচার মাইকে হামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬টি মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। দুটি মাইক লুটে নেয়া হয়েছে। প্রচারণার কাজে অংশ নেয়া কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। নদীপথে ট্রলার বন্ধ করে জনসমাগম বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু কোনো বাধাই বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ রুদ্ধ করতে পারবে না। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচি দুই মাসের। সরকারের ব্যর্থতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়েছে। দেশবাসী নিরাপত্তাহীন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিলো, সেই স্বাধীনতা আজ নেই বললেই চলে। গণতন্ত্র নির্বাসিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দুদু বলেন, এই বাহিনী বাংলাদেশের। কোনো দলের না। নিজের স্বার্থে, দলের স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। অতীতে কোনো আইজিপি অবসরে যাওয়ার পর পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হয়নি। আমেরিকা মানবাধিকার প্রশ্নে সাতজনকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বিএনপি স্বৈরতন্ত্রকে বিদায় জানিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম করছে। যারা স্বৈরতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান করছেন তাদেরকে উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দিনই শেষ দিন না। আরও দিন আছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কর্মসূচি সফল করতে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি। নেতাকর্মীরা কোনো লাঠি বহন করবে না, তবে তারা প্ল্যাকার্ড বহন করবে। মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের কর্মসূচির সফলতা দেখে শাসক দল ও প্রশাসন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে বাড়িতে হামলা ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। তারা খুলনার কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। ইতিমধ্যে সমস্ত পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। খেয়াঘাট বন্ধ করে দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কু-ু, মহানগর আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।