স্টাফ রিপোর্টার: রপ্তানি নিষিদ্ধ করলেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ গম সরবরাহের অনুরোধ পেয়েছে ভারত। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে সৃষ্ট খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে অন্যতম প্রধান এই শস্যের ১৫ লাখ টনের বেশি চাহিদা পেয়েছে দেশটি। তবে এই চাহিদার বেশির ভাগই বাংলাদেশের কাছ থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে। গতকাল সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও সরকারি সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারের অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির সরকারি একজন কর্মকর্তা বলেছেন, অর্ধ ডজনের বেশি দেশ ১৫ লাখ টনেরও বেশি গম সরবরাহের জন্য ভারতের সাথে যোগাযোগ করেছে। আমরা দেখবো তাদের অনুরোধ কীভাবে রক্ষা করা যায়।
দেশটির সরকারি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট এই কর্মকর্তা বলেছেন, ভারত ঝুঁকিপূর্ণ সব দেশ এবং যাদের গমের প্রয়োজন, তাদের সহায়তা করতে আগ্রহী রয়েছে। তবে ১৫ লাখ টন গমের চাহিদার বেশির ভাগই বাংলাদেশ থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। ভারতের গমের নিয়মিত ক্রেতা বাংলাদেশ।
স্থানীয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধ এবং সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে গত ১৩ মে গমের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের নির্দিষ্ট অনুরোধের প্রেক্ষাপটে গম রপ্তানি সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে চালু রাখে নয়াদিল্লি।
অন্যান্য দেশের কাছ থেকে যে দামে কেনা যায় তার তুলনায় কমপক্ষে ৩০ শতাংশ সস্তায় ভারতের কাছ থেকে গম কিনতে পারে বাংলাদেশ। একটি বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় শাখার প্রধান কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতের কাছ থেকে কেনা গম এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছে যায়। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অনীহা জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি গম আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু উচ্চ মূল্যের কারণে সেই দরপত্র পরবর্তীতে বাতিল করে ঢাকা। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত অর্থ বছরে ভারত থেকে রেকর্ড ৪০ লাখ টন গম আমদানি করেছিল বাংলাদেশ। এক বছর আগে বাংলাদেশের ভারতীয় গম আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ১২ লাখ টন।
তারা বলেছেন, বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বৃহত্তম গম আমদানিকারক মিসর বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতের কাছে ৫ লাখ টন গম চেয়েছে। জ্যামাইকা এবং এশিয়ার অন্যান্য আরও কয়েকটি দেশও ভারতের কাছে গম চেয়েছে।
বৈশ্বিক ওই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় শাখার আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণ গম প্রয়োজন। ভারত হয়তো পুরো চাহিদা পূরণ করতে পারবে না।
উগান্ডা ও ইথিওপিয়ার মতো দেশে এই খাদ্যশস্য সরবরাহের জন্য জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কাছ থেকেও গমের অনুরোধ পেয়েছে ভারত।