স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচজনকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১ মার্চের মধ্যে তাদের হল ছাড়তে হবে। গতকাল সোমবার সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রভোস্টসহ হলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেখানে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত হলের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তাকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের সময় তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য শেষে বেরিয়ে এ কথাই বললেন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। গতকাল বিকেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। গতকাল রোববার হল প্রভোস্ট শামসুল আলমের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এই কমিটির আহ্বায়ক হলের আবাসিক শিক্ষক আহসানুল হক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ইসরাত জাহান, ইতিহাস বিভাগের মৌমিতা আক্তার ও হলের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক। এ ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মুন্সি কামরুল হাসানকে আহ্বায়ক করে দুই সহ সভাপতি বনি আমিন ও রাকিবুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেনকে কমিটির সদস্য করা হয়। তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। আজ ছাত্রলীগ তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ফুলপরীকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে।