স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা গতকাল শাহবাগে মহাসমাবেশ করেছেন। সমাবেশ শেষে তারা সচিবালয়ের দিকে রওনা হলে শিক্ষা ভবনের সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশ তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে গতকাল বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সেখানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শিক্ষকদের ডাকা মহাসমাবেশ শুরু হয়। দুপুরে তারা শাহবাগ থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা করে সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ সড়ক ছাড়তে বললেও তাতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। এ সময় জলকামান ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এর আগে সকালে রাজধানীর শাহবাগে মহাসমাবেশ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ শিক্ষা ভবনের সামনে ব্যারিকেড দেয় এবং আন্দোলনরত শিক্ষকদের লক্ষ্য করে জলকামান, টিয়ারশেল ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। আন্দোলনকারীরা জানান, তারা টানা ১১ দিনের মতো এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। তারা বলেন, তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে তিন দিন পুলিশ বাধা দিয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করার পাশাপাশি পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাদের ওপর জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করেছিল। ওই দিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটাও করে। আন্দোলনকারীদের একজন টাঙ্গাইলের সানজিদুল আলম বলেন, আমরা শাহবাগ থেকে বিকাল ৩টার দিকে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকি। শিক্ষা ভবনের কাছে পৌঁছলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের পথ আটকায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে আমাদের বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ পুরুষ শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে এবং নারী শিক্ষকদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে। সানজিদুল আরও জানান, এরপর পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে হাইকোর্টের আশপাশে নিরাপদ জায়গায় ছড়িয়ে যান। মানিকগঞ্জ থেকে আসা সোনিয়া আক্তার বলেন, আমাদের নিয়োগের দাবিতে ১১ দিন ধরে আমরা রাজপথে। আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। সেই ৬ তারিখ থেকে আমরা আজকের দিন পর্যন্ত রাস্তায় মার খেয়ে যাচ্ছি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে দেন হাই কোর্ট। হাই কোর্টের রায়ে আপিল বিভাগের কোটাসংক্রান্ত সর্বশেষ রায় অনুসরণ করে নতুন ফলাফল প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা।
পূর্ববর্তী পোস্ট
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.