স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একের পর এক সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোট দিয়েছে। আমরা প্রমাণ করেছি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য আমি সব জনপ্রতিনিধিকে আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের জনসংখ্যা, অর্থনীতি, কৃষিসহ সবকিছুই স্মার্ট হবে। তাই দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আমরা এলাকা দেখে কাজ করি না। প্রত্যেক নাগরিকের উন্নতির জন্য কাজ করছি।
সোমবার সকাল ও দুপুরে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়রদের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সকালের অনুষ্ঠানে শপথ নেন বরিশালের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, খুলনার তালুকদার আব্দুল খালেক এবং গাজীপুরের জায়েদা খাতুন। দুপুরে শপথ নিয়েছেন রাজশাহীর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। একই স্থানে এসব সিটির নব-নির্বাচিত সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে সেবা দিয়ে তাদের আকাক্সক্ষা পূরণে কাজ করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার শুধু নগরীতেই নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতচক্র সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। বিএনপি সরকার বাংলাদেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিলো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, তিনি সবার প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে কে তার দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, তা দেখেন না। শেখ হাসিনা বলেন, আমি যা কিছু করি, জনগণের কল্যাণের জন্য করি।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নিজ এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে কাজ ও সেবা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। আমি চাই, আপনারা জনগণের সেবা এবং তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।
২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নি সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোয় এমন কোনো ভয়ংকর পরিস্থিতি আমরা দেখতে চাই না। আমাদের (জনপ্রতিনিধিদের) লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা, জনজীবনে শান্তি নিশ্চিত করা এবং তাদের উন্নত জীবন দেয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে। ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ বছরে সরকার বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় জনগণের সেবা ও ইচ্ছা পূরণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা আপনাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, তাদের আশা পূরণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নব-নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি তাদের এলাকার বাড়িঘর ও এর আশপাশের এলাকা পরিষ্কার ও জমা পানি থেকে মুক্ত রেখে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।