স্টাফ রিপোর্টার: পদত্যাগ করেছেন রাষ্ট্রের দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা ও অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। গতকাল রোববার রাষ্ট্রপতি বরাবর লেখা নিজ নিজ পদত্যাগপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করেন তারা। পদত্যাগপত্রে দুইজনই ব্যক্তিগত কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, দুইজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। শিগিগরই এসব পদে নতুন নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে সবসময় আসা-যাওয়া থাকেই। তারা অনেক দিন কাজ করেছেন, ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে হয়তো আর থাকছেন না। এখন যদি তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয় তাহলে সরকার অবশ্যই আরো দুইজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেবেন বলে আমি আশা করি।
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের একাধিক আইন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই দুইজন দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তারা চাইছিলেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে অ্যাটর্নি জেনারেল করা হতে পারে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় অভিমান নিয়েই তারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। এরপর ওই বছরের ২৭ মার্চ অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা এবং ২০১০ সালের ৪ জুলাই থেকে মোমতাজ উদ্দিন ফকির অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ সাড়ে এগারো বছর অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম। গত ২৭ সেপ্টেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় মারা যান মাহবুবে আলম। এরপর থেকে পদটি শূন্য ছিলো। কাকে অ্যাটর্নি জেনারেল করা হচ্ছে সেটা নিয়ে আইন অঙ্গনে চলছিল নানা আলোচনা। এরই মধ্যে গত ৮ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিনকে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ওই নিয়োগের পরই তাকে অভিনন্দন জানায় সরকারবিরোধী সমর্থক আইনজীবীরা। বিকেলে ওই নিয়োগের পর ওইদিনই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তারা রোববার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
এর মধ্যে মোমতাজ উদ্দিন ফকির সকালে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সলিসিটর অফিসে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। আর মুরাদ রেজা সরাসরি আইন মন্ত্রণালয়ে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। এর বাইরে কিছু নয়। তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুরাদ রেজাকে পাওয়া যায়নি।