নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দ্বন্দ্ব : অনড় অবস্থানে দুই দল
সংবিধানের বাইরে যাবে না আ.লীগ : আন্দোলনের পথেই হাঁটছে বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংবিধানের বাইরে আপাতত কিছুই ভাবছে না আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে বিএনপিসহ বিরোধীদের দাবি ও আন্দোলনেও খুব বেশি পাত্তা দিতে নারাজ ক্ষমতাসীনরা। ইস্যুটি নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনাতেও রাজি নয় তারা। এদিকে নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কোনো প্রভাব যেন না থাকে সে বিষয়টিও কৌশলে মোকাবিলা করছে দলটি। সংবিধান মেনেই অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব বলে তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং মাঠের আন্দোলনে বিরোধীদের মোকাবিলাও করছে আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, তারা চায় বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সেক্ষেত্রে সংবিধানের বিদ্যমান ধারা ও বিধি মেনে তাদের যত ধরনের সুবিধা দেয়া যায় দেয়া হবে। তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার সুযোগ থাকলে তাও মানা হবে। কিন্তু সংবিধান থেকে তারা এক চুলও নড়বে না।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি যেসব দাবি করছে, এগুলো অবান্তর, অযৌক্তিক। তারা আসলে উ™£ান্তের মতো পথ চলছে। সংবিধান মেনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, বিএনপিকে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা সন্ত্রাস-অনিয়মের পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে আসবে কিনা? গণতান্ত্রিক দেশে সরকার পরিবর্তনের একমাত্র মাধ্যম হলো ভোট/নির্বাচন। তাই তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, নির্বাচন করবে। জনগণ ভোট দিলে সেই যুদ্ধে বিজয়ী হবে। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। এক্ষেত্রে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে লাগাতার বিক্ষোভ, সমাবেশ এবং পদযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা। উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোও বর্জন করে আসছে তারা। সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ৯ দফা দাবিতে গত ডিসেম্বর থেকে অনেকটা লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই হুমকি এখনো পর্যন্ত খুব একটা আমলে নিচ্ছে না। দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপির এই হুমকিতে তারা ভীত নয়। তারা চায় বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু নির্বাচনের বাধা সৃষ্টি করলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর এক নেতা বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের সবাই চায় আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক। আমরাও চাই নির্বাচনে বিএনপিসহ সবাই অংশ নেবে। আমাদের দলের সভানেত্রীও (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) একাধিক আলোচনা সভায় বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট কথা বলেছেন। কিন্তু তাদের (বিএনপি) নির্বাচনে আসতে হলে সংবিধান মেনেই আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান মেনে তাদের যতটা ছাড় দেয়া যায়, সেটা দেয়া হবে। সংবিধানের মধ্যে থাকলে দাবিও মানা হবে। কিন্তু সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ নিয়ে আলোচনারও সুযোগ নেই। আন্দোলন বা হুমকি-ধমকি দিয়েও কোনো লাভ হবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারাও প্রায় প্রতিদিনই তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে বর্তমান সংবিধানিক ধারার বাইরে না যাওয়ার বিষয়ে নিজেদের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানাচ্ছেন। বিএনপির কর্মসূচির দিনেও মাঠে থাকছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে ভোটের আগে বিদেশি প্রভাব মোকাবিলাতেও কৌশলী ভূমিকায় আওয়ামী লীগ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশ ও সংস্থাগুলোকেও সংবিধানের ভেতরে থেকেই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে আশ্বাস দিচ্ছেন তারা। সংবিধানের বাইরে গেলে বা অনির্বাচিত সরকার এলে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়-সে বিষয়ে অতীতের অভিজ্ঞতার কথাও জানাচ্ছেন। অতীতে জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে ‘বিএনপির সহিংস’ কর্মকা-ও তুলে ধরছে তারা। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময়ে সরকারের ভূমিকা কী হবে এবং কর্তৃত্ব কেমন হবে সে বিষয়গুলোও আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করছে ক্ষমতাসীনরা।
বৃহস্পতিবার গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাতটি দেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলে। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলেছি-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ হবে এবং নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আর আমাদের বক্তব্য ভিন্ন কিছু নেই। উনি যা বলেছেন, তার প্রতিধ্বনি করেছি। কারণ আমাদের দল একই ধারণা নিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বৈঠকে কোনো পরামর্শ দেয়া হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তো কারও নির্দেশনা শুনব না। আমাদের নির্দেশনা হলো-দেশের সংবিধান। এর একদিন পর শনিবার রাজধানীতে এক সমাবেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভুলে যাওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিএনপিই প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলো। এখন তারাই আবার সেই অসাংবিধানিক দাবি করছে। বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। দেশের জনগণও তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না। বিএনপি এখন আবার ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। এর জবাব তাদের জনগণই দেবে। তিনি আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা নির্বাচনে আসবে। আর যারা করে না তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করবে। বিএনপি সেই ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে।
সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ দশ দফা দাবির বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না বিএনপি। এজন্য দাবি আদায়ে আন্দোলনের পথেই হাঁটছে দলটি। এবার সফলতা পেতে আটঘাট বেঁধে নেমেছেন নেতারা। চলছে নানামুখী তৎপরতাও। একই সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কৌশলও নিয়েছেন তারা। যে কারণে দশ দফার সঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইস্যুতে কর্মসূচি দিচ্ছেন। ইউনিয়ন ও মহানগরের পর সব সাংগঠনিক জেলায় পদযাত্রার মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক শক্তি পরীক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে চায় দলটি। এছাড়া দাবি বাস্তবায়নে সরকারের ওপর আরও চাপ তৈরি করতে কূটনৈতিক তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন এসব তথ্য।
জানা যায়, এবার দল ‘ডু অর ডাই’ নীতিতে-এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য সেভাবেই প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। নেতাদের ধারণা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সংলাপ বা আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা-এ ধরনের আলোচনায় কোনো ফল আসেনি। যে কারণে এবার তারা কোনো প্রস্তাবেই সাড়া দেবেন না। যদি সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, এ দুই দফা মেনে নেয়া হয়, তবেই সংলাপ বা আলোচনার বিষয় বিবেচনা করা হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দাবি না মানলে রাজপথেই ফয়সালা হবে। বিএনপির দশ দফার সঙ্গে জনগণও যে একমত, এর প্রমাণ পেয়েছি বিভিন্ন পদযাত্রায়। ভালো সাড়া পাচ্ছি। জনগণ অংশগ্রহণ করছে। সারা দেশে জনগণ আওয়াজ দিয়েছে-যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, তারা দেশ মেরামত করতে পারবে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ বিপন্ন, এ সরকার থেকে জনগণ মুক্তি চায়। অবৈধ সংসদ বাতিল করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। বিএনপির দাবির পক্ষে আস্তে আস্তে স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণ হবে-আমরা সেটাই প্রত্যাশা করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহল বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। দেশের জনগণের পাশাপাশি বিশ্বও বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দেখতে চায়। আমরা দশ দফা দিয়েছে। এ দশ দফা মেনে সরকার যদি সংলাপ বা আলোচনার আহ্বান করে, নিশ্চয় আমরা যাব। এটা দশ দফার ওপর এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।’
এদিকে আগামী শনিবার সব সাংগঠনিক জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি সফলে নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি সফল হয়েছে। জেলায়ও সফল হবে। ইতোমধ্যে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলাভিত্তিক প্রস্তুতি সভা শুরু করেছেন। সেখানে জেলা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের শীর্ষ পাঁচ নেতাকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, জেলা পর্যায়ের পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অংশ নেবেন। এজন্য লিফলেট বিতরণসহ নানা ধরনের প্রচারণা চলছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, জেলা ও এর অধীনে থাকা ইউনিটের পদধারী সব নেতার পদযাত্রায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। ইচ্ছাকৃতভাবে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ না নিলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও বলা হয়েছে। এছাড়াও সব বিভেদ ভুলে নেতাকর্মীদের জেলার পদযাত্রায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, জেলার পর উপজেলা, থানা ও পৌরসভায় কর্মসূচি দেয়া হবে। এরপর আবার জেলায় জেলায় কর্মসূচি শেষ করে মহানগরে কর্মসূচি পালন করা হবে। এভাবে কর্মসূচির সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে হাঁটতে চায় বিএনপি। পরে মে-জুনে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা ভাবছেন নেতারা।
এদিকে দাবি আদায়ে আন্দোলনের পাশাপাশি বন্ধুরাষ্ট্রের সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করছে বিএনপি। এজন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। গত এক মাসে বাংলাদেশে নিযুক্ত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দলটির সিনিয়র নেতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্যরা। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিনিধি হিসাবেও বেশ কয়েকজন নেতা প্রভাবশালী কয়েকটি দেশ সফর করেছেন।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন এবং মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, গুম-খুন হত্যা হচ্ছে। এসব কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক বিষয়। সারাবিশ্ব এসব অবগত। বিশ্বের যে কোনো শক্তি এবং বাংলাদেশের ভেতর ও বাইরের আন্তর্জাতিক সংগঠন যারা গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, সুশাসনের পক্ষে; তারা বাংলাদেশে যা চলছে, সেই সম্পর্কে অবগত। বিএনপির সঙ্গে সবার যোগাযোগ আছে।’
খালেদা জিয়ার রাজনীতির বিষয়টি সামনে আনায় ‘সন্দেহ’ স্থায়ী কমিটির: এদিকে হঠাৎ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতির বিষয়টি সামনে আনাকে সন্দেহের চোখে দেখছে স্থায়ী কমিটি। সোমবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় এ প্রসঙ্গে কথা বলেন নেতারা। বিষয়টিকে সরকারের ‘কূটকৌশল’ বলে মনে করেন তারা। একই সঙ্গে এ নিয়ে কোনো কথা না বলার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না-তার মুক্তির সময় এমন কোনো শর্ত সরকার দেয়নি। তার এই বক্তব্যের প্রসঙ্গটি স্থায়ী কমিটির সভায় ওঠে। হঠাৎ করেই খালেদা জিয়ার রাজনীতির বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে তোলাটা মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন নেতারা। নির্বাচন ও আন্দোলনকে সামনে রেখে এমন বক্তব্য ‘রাজনৈতিক ফাঁদ’ হতে পারে বলেও সভায় কয়েকজন মন্তব্য করেন। পরে এ বিষয়টি নিয়ে মাথা না ঘামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল মুক্তি দেয় সরকার। তখন দেশে করোনাভাইরাস মহামারি চলছিলো। ওই সময় যে শর্তে মুক্তি দেয়া হয়েছিলো, এর মধ্যে ছিল খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না এবং দেশে থেকে বাসায় চিকিৎসা নেবেন। এরপর থেকে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।