নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি দেখতে চান ৬৮ শতাংশ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চান দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ। বিপরীতে প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ চান রাষ্ট্রপতি হবেন দলীয় ব্যক্তি। জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ। আর সংসদ-সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন ১৩ শতাংশ।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের জন্য তৈরি জাতীয় জনমত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জরিপটি পরিচালনা করে। ২০-২২ ডিসেম্বর জরিপটি পরিচালনা করে বিবিএস।
জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ। তবে ৩১ শতাংশ মানুষ এটিকে সমর্থন করেন। প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না।
জরিপে রাষ্ট্রপতি হিসাবে প্রত্যাশিত ব্যক্তির ধরন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এখানে চারটি উত্তর থেকে যে কোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো নির্দলীয়, জানি না ও উত্তর দিতে ইচ্ছুক নই। উত্তরদাতাদের ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ দলীয় ব্যক্তির পক্ষে, ৬৮ দশমিক ২৮ শতাংশ নির্দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বলেছেন, তারা এ বিষয়ে জানেন না। আর ১ শতাংশের কিছু কম মানুষ উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন বলে জানান।
জরিপে নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য রোধে প্রধান দায়িত্ব কার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এখানেও চারটি উত্তরের একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। এর মধ্যে ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, এই দায়িত্ব রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রার্থীর। ৪৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বলেছেন, এই দায়িত্ব জনগণের।
এ প্রশ্নের জবাবে ‘জানি না’ বলেছেন ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ উত্তরদাতা। আর শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ বলেছেন, তারা উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন। এছাড়া নির্বাচনে ‘না’ ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশনও তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৪ শতাংশ জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পক্ষে মত দেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোট ৫০ শতাংশের কম হলে ওই আসনে পুনর্নির্বাচনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। বিপক্ষে মত দেন ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্র্নিবাচন আয়োজনের সুপারিশ করেছে।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করে নির্দিষ্ট নির্বাচনি এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের পক্ষে মত দেন প্রায় ৭৪ শতাংশ। আর প্রায় ২০ শতাংশ ছিলেন বিপক্ষে। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ। আর প্রায় ৩১ শতাংশ এটিকে সমর্থন করেন।
প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না। বিদেশে রাজনৈতিক দলের শাখা রাখার বিষয়টিকে সমর্থন করেন না ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বিদেশে দলের শাখা থাকার বিষয়টিকে সমর্থন করেন। ৮৭ শতাংশ মানুষ প্রবাসীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোট আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, জরিপে নমুনায়নের মাধ্যমে ৪৬ হাজার ৮০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যারা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি খানা থেকে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি নাগরিকদের মধ্যে ‘কিশ গ্রিড সিলেকশন’ পদ্ধতিতে একজন নির্বাচিত উত্তরদাতার কাছ থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। ৪৬ হাজার ৮০ জন মানুষ এই জরিপে অংশ নিয়েছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More